Skip to content

খড়্গপুর শহরে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের পথনাটক উৎসব!

1 min read

অরিন্দম চক্রবর্তী : ভারতীয় গণনাট্য সংঘ পশ্চিমবঙ্গ শাখার ত্রয়োদশ জেলা সম্মেলন উপলক্ষে ৪ঠা নভেম্বর অনুষ্ঠিত হলো পথনাটক উৎসব। খড়্গপুর শহরে মালঞ্চ আদি পূজো কমিটির বাদল সরকার মঞ্চে এদিন নাট্যদল গুলি এসেছিল জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। নাটকের উদ্বোধনে এদিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার বিখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব আশীষ চট্টোপাধ্যায়। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন-সরস শতকে মনসামঙ্গল কাব্য থেকে নাটকের সূত্রপাত, শ্রীচৈতন্যদেব পদব্রজে যেতে যেতে বিভিন্ন জায়গায় নাটক অনুষ্ঠিত করতেন। অনেকের ধারণা ব্রিটিশরা বাংলা থিয়েটারের সূত্রপাত করেন। পথনাটকের আনুষ্ঠানিক শুরু হয় ১৯২৪ সালে রাশিয়াতে অক্টোবর বিপ্লবের মাধ্যমে। এই ধরনের নাটকের বৈশিষ্ট্য রাজনীতির কথাবার্তা শিল্পের ভাষায় মানুষের কাছে পৌঁছে তার চেতনায় আঘাত করে তার চেতনা জাগানো। বিশিষ্ট নাট্যকার নন্দদুলাল গুছাইত বলেন-নিছক মনোরঞ্জনের জন্য নয় একটা লক্ষ্য নিয়ে আমরা নাটকগুলি মঞ্চস্থ করি।

থিয়েটার কালচার পরিবেশিত" মড়া "নাটকের একটি অংশ

সমাজটাকে গড়ে তোলার একটা শিক্ষা প্রতিটি নাটকের মধ্যে থাকে। খড়্গপুর শহরের বর্ষিয়ান নাট্য ব্যক্তিত্ব সমীর গাঙ্গুলী বলেন-থিয়েটারের বহু ভাগ রয়েছে পথনাটক সব থেকে কঠিন প্লাটফর্ম। এখানে অভিনয় প্রধান। মানুষের ভিড়ের মাঝে অভিনয় করতে হয় দাপটের সাথে। পথনাটক গুলিতে সমকালীন সমস্যার বিভিন্ন আঙ্গিক তুলে ধরা হয়। পথনাটক এ দেশে বিস্তার লাভ করে ১৯৮৯ সালে। দিল্লিতে নাট্য ব্যক্তিত্ব সরদার হাসমিকে গুলিবিদ্ধ করা হয় পয়লা জানুয়ারি পরের দিন তিনি মারা যান। তাকে স্মরণ করে প্রতিবছর তার জন্মদিন ১২ এপ্রিল জাতীয় নাট্যদিবস পালন করি আমরা। বাদল সরকার নাটকের কাঠামোকে আরো উন্নত করেন। পথনাটকের মাধ্যমে অল্প সময়ে মানুষের সমস্যা তুলে ধরে সঠিক বার্তা পৌঁছে দিতে পারি। এছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সমর চৌধুরী।

মেদিনীপুরের ক্রান্তিক পরিবেশিত "দহন কন্যারা"নাটকের একটি অংশ

উদ্বোধনের সংগীত-"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি..."পরিবেশন করেন স্বপ্ন বন্দোপাধ্যায় ও সু পান্থ বসু। এদিন প্রথম নাটকটি মঞ্চস্থ হয় ঘাটাল দাসপুরের কৃষ্টি সেনার 'হারানো প্রাপ্তি'। নাটকে নিরুদ্দেশ ব্যক্তির পুলিশ প্রশাসন থেকে গৃহাভ্যন্তরে অবহেলার চিত্রটি তুলে ধরা হয়েছে। দ্বিতীয় নাটকটি ছিল প্রেম বাজারের গণজাগরণ কণ্ঠের 'অন্য পৃথিবী'। নাটকের মাধ্যমে মহামারী ও পুঁজিবাদের শোষণ শাসনের চিত্রটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তৃতীয় নাটকটি ছিল মেদিনীপুরের কৃষ্টি সংসদ এর 'বল হরি হরি বোল'। এতে দেখানো হয়েছে শাসকের দুর্নীতির চিত্রগুলি। পরের নাটকটি ছিল মেদিনীপুরের ক্রান্তিকের 'দহন কন্যারা'। পৌরাণিক যুগ থেকে অভয়াকাণ্ড পর্যন্ত নারীরা যেভাবে অত্যাচারিত হয়ে আসছে তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তারা। খড়্গপুর থিয়েটার কালচার তাদের অভিনীত 'মড়া' নাটকের মাধ্যমে হিন্দু মুসলমানের ঠুনকো জাতপাতের লড়াই নিয়ে দেখানো হয়েছে। সবশেষে উজান শাখা তাদের নাটক' লজ্জা নেই'পরিবেশন করেন। এদিন নাটক দেখতে বহু মানুষের ভিড় হয়। ৫ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জেলা সম্মেলন।

Latest