নিজস্ব সংবাদাতা: অখিলভারত হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি তথা তালীম মিউজিক অ্যাকাডেমীর কর্ণধার ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর উদ্যোগে রবীন্দ্রসদন রানুছায়া মঞ্চে উস্তাদ জাকির হোসেনের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হল। তালীম অ্যাকাডেমি, সিলেস্টিয়াল ইনসাইটস হিলিং এবং হিন্দুমহাসভার সাংস্কৃতিক বিভাগ সমন্বয় মঞ্চের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন বহু বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী এবং হিন্দু মহাসভার সদস্যরা। ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য উস্তাদ জাকির হোসেন তাঁর হাতের তবলার বোল দিয়ে প্রমাণ করেছেন একজন সংগীতশিল্পী তাঁর শিল্পসত্ত্বা দিয়ে ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করতে পারেন। জন্মগত প্রতিভা এবং ভগবানের আশীর্বাদ না থাকলে জাকির হোসেনের মত শিল্পী সৃষ্টি হয় না যিনি সারা পৃথিবীতে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। জাকিরজীর প্রয়াণ ভারতীয় সংগীত জগতে যথার্থই ইন্দ্রপতন এবং এর ফলে সাঙ্গীতিক ক্ষেত্রে এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো। অনেকেই অনেক ভাবে কোন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে স্মরণ করেন কিন্তু আমাদের শ্রদ্ধা জানানোর ভাষা একদম অন্য রকম। আজ পৃথিবীতে অনেক মানুষ নানারকম শারীরিক ও মানসিক অসুখে আক্রান্ত । কিন্তু শব্দবিজ্ঞান এবং সঙ্গীতকে যদি উপযুক্ত ফ্রিকোয়েন্সিতে ব্যবহার করে মানুষকে রোগমুক্ত করা হয় বা ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয় তখন তাকে সাউন্ড অ্যান্ড মিউজিক থেরাপি বলে । সেলিস্টিয়াল ইনসাইটস হিলিং সংস্থার কর্ণধার ডক্টর চৈতিশা পদ্মলোচনা চন্দ্রা বলেন জাকিরজিকে সাক্ষী করে তালীম অ্যাকাডেমি এবং সিলেস্টিয়ান ইনসাইটস হিলিং এই দুটি সংস্থা আগামী দিনে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে মিউজিক থেরাপির পরিষেবা দেওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর । অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন রাখী চৌধুরী, ডক্টর শ্যামশ্রী সুর, বিতস্তা চ্যাটার্জী সহ আরো অনেক বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী । হিন্দু মহাসভার রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে অফিস সেক্রেটারি অনামিকা মন্ডল, বিনয় আগরওয়াল, সোহেল ভট্টাচার্য, সম্রাট রায়চৌধুরী, সৌরিশ দাস, সায়ন্তি ভট্টাচার্য্য, অরিন্দম রায় সহ আরো অনেক নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন । তবে জাকির হোসেনের স্মরণসভাতেও বাংলাদেশী শিল্পীদের বয়কটের দাবী উঠলো । হিন্দুমহাসভার রাজ্যসভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য শিল্পের মধ্যে কখনো জাতি ধর্ম বর্ণ ইত্যাদি বিভাজন আনা উচিৎ নয় কারণ শিল্পীর কোন জাতি বা শিল্পের কোন গণ্ডি হয়না । কিন্তু এর পরেও বলবো আমাদের কাছে দেশের সম্মান এবং দেশবাসীর নিরাপত্তা সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । সম্প্রতি বাংলাদেশে যেভাবে সংখ্যালঘু হিন্দু ও মডারেট মুসলমানদের গণহত্যা করা হচ্ছে তাতে প্রতিদিন মানবাধিকার ধর্ষিত হচ্ছে । তাছাড়া ভারতের জাতীয় পতাকাকে পদদলিত করার মত পাপ বাংলাদেশীরা করেছে । তাই যতদিন না ওরা ক্ষমা চেয়ে প্রায়শ্চিত্ত করছে ততদিন সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশী শিল্পীদের ভারতের মাটিতে বয়কট করা উচিত। আজ যদি বাংলাদেশের পাপকে আমরা শিল্পের দোহাই দিয়ে লঘু করে দেখি তাহলে ভারতের পতাকা এবং ভারত মায়ের বীর জওয়ানদের আত্মবলীদানকে অপমান করা হয়। তাছাড়া যেভাবে ইসলামিক মৌলবাদী জঙ্গী পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ধরা পড়ছে তাতে হতেও পারে জঙ্গীরাই ভিড়ের মধ্যে মিশে থেকে কোন বাংলাদেশী শিল্পীর উপর প্রাণঘাতী আক্রমণ করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের নাম কালিমালিপ্ত করবে। যেহেতু শীতকালে একাধিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় তাই এই বিষয়ে আমরা লিখিতভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং ভারত সরকারকে অখিলভারত হিন্দুমহাসভার পক্ষ থেকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি । অনুষ্ঠানের শেষে ডক্তর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর গলায় ওনার বানানো বাংলাদেশকে উদ্দেশ্য করে পাল্টা জবাব দিয়ে নতুন "দেশটা তোমার বাপের নাকি" গানটা উপস্থিত সকলের প্রতিবাদের ভাষা হয়ে ওঠে।