খড়গপুর অরিন্দম চক্রবর্তী: ১৯৮১ সালের পর , এই প্রথম বার রেল নগরী খড়গপুর শহরের অন্ধ্র স্কুলে দুদিন ব্যাপী সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৫তম জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। রবিবার ও সোমবার অথাৎ ১২ এবং ১৩ই জানুয়ারি ২০২৫ অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে ছিল বর্ণাঢ্য মিছিল। এই সম্মেলনে উদ্বোধনী সংগীত ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ছিল। উদ্বোধনের দিন ডেবরা থেকে আসা ২৫ টি মশাল গ্রহণ করেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। পার্টির দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন বষিয়ান নেতা তথা জেলার প্রাক্তন সম্পাদক দীপক সরকার। উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহ: সেলিম, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, রাজ্য কমিটির সদস্য ডাক্তার পুলিনবিহারী বাস্কে ও গীতা হাসদা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে আয়োজিত সিপিএমের ২৫তম জেলা সম্মেলনে ওই সিদ্ধান্তের পাশাপাশি ৬৮ জনের জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে।
এই সম্মেলনে জেলার বাহান্নটি সিপিএমের এরিয়া কমিটি অংশগ্রহণ করে। সম্মেলনে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৪০০ জন প্রতিনিধি যোগদান করেন। ১৩ই জানুয়ারি রাত্রে সম্মেলন শেষ হয়। এই সম্মেলন থেকে আগামী তিন বছরের জন্য ৬৮ জনের নতুন সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে ,পরে আরো দুজন যুক্ত হবে বলে জানা গেছে। কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন বিজয় পাল। সম্মেলন উপলক্ষে ১১ই জানুয়ারি কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যান্ড থেকে মালঞ্চ পর্যন্ত একটি মহা মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। মিছিলের সূচনা করেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। মহা মিছিলে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন জেলা সম্পাদক দীপক সরকার, তরুণ রায়, ক্ষারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক বিজয় পাল, জেলা কমিটির সদস্য কমল পলমল, মেঘনাথ ভূঁইয়া, বিশ্বনাথ দাস সহ আরো বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
সম্মেলন থেকে ১৩ টি দাবী ক্ষমতাসীন সরকারের উদ্দেশ্যে করেন। তার মধ্যে ছিল সংবিধানে প্রদত্ত নাগরিক অধিকার, ন্যূনতম মজুরি এক হাজার টাকা, নারী সুরক্ষা সম্মান ও মর্যাদা, ভর্তুকি মূল্যে কৃষি সরঞ্জাম, সার,সেচ, কীটনাশক, বেকার যুবদের কাজ ও আরো অন্যান্য। মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে প্রসূতি মৃত্যু নিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন-জনগণের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সব দপ্তরের দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। এই মৃত্যুর জন্য দায়ী স্যালাইন। এটি কেনার কাজ নিয়ন্ত্রণ করে সরকার। তাই দায় সরকারের। চিকিৎসকরা বলছেন স্যালাইন চেক করে দেয়া উচিত ছিল। ভালো করে চেক করার দায়িত্ব স্বাস্থ্য প্রশাসনের। এটা খুব অন্যায় কাজ হয়েছে। দায়ী সরকারকেই করব। বিমান বাবু আরো বলেন-মুখ্যমন্ত্রীর তো একটাই মাথা, দুটো চোখ। একটা মাথায় এত কিছু থাকে? দুটো চোখে এত কিছু দেখা যায়? যায় না। অতীতে এ রাজ্যের কোন মুখ্যমন্ত্রী কে এত দপ্তর হাতে রাখতে দেখিনি। উনি নড়লে দপ্তর নড়বে না নড়লে দপ্তর নড়বেনা। তাই মন্ত্রিসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বস্ত লোকেদের হাতে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। শিক্ষার প্রসঙ্গে তিনি বলেন -গরিব মানুষের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেয়ার চেস্টা করা হচ্ছে। তাই রাজ্যে বেসরকারি স্কুলের রমরমা বাজার। প্রসঙ্গত: সম্মেলনে প্রাক্তন জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ হাজির হবে কিনা তার চর্চা ছিল। কারণ মহিলা ঘটিত। তবে শেষ মুহূর্তে হাজির হয়েছেন তিনি।