পশ্চিম মেদিনীপুর সেখ ওয়ারেশ আলী : বদলেছে রাজনীতির পাশা, বদলেছে শাসক,বদলেছে শালবনীর হাল-হকিকত। তবে বর্তমানে সেই দিনের ঘটনা নাড়া দেয় রাজনীতিক থেকে সাংবাদিকদের স্মৃতিতে। ২ নভেম্বর ২০০৮ দুপুরে হঠাৎ মেদিনীপুর শহরের থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে কলাইচন্ডী খালের উপর বিস্ফোরণ ঘটে চারিদিকে শুধু ধোঁয়া আর ধোঁয়া। মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কনভয় ভেবে মাইন ফাটায় মাওবাদীরা। তবে অল্পের জন্যে বাঁচেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব -সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা।সেদিন সকাল ১০টা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সদর মহকুমার শালবনিতে ৪৩০০ একর জমির উপর জিন্দাল গোষ্ঠীর বিশাল আকারের এক স্টিল প্ল্যান্টের শিলান্যাস করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী। বাম জামানায় বড় ইস্পাত কারখানার জন্য পশ্চিম মেদিনীপুর শালবনিতে জমি জিন্দাল গোষ্ঠীকে প্রস্তাবটি স্পাইক কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।

ইস্পাত কারখানা পরিকল্পনা থমকে যায়।২০১৬ সালে সিমেন্ট কারখানার শিলান্যাস করেন। ২০১৮ সালে কারখানাটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরের সিমেন্ট কারখানায় সম্প্রসারণ হয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়ন ধারাকে রেখে কর্মসংস্থান আরেক ধাপ এগিয়ে এলো জিন্দাল। আগামী সোমবার ২১শে এপ্রিল শালবনী জিন্দাল গোষ্ঠীর পাওয়ার প্ল্যান্টের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়েই এই শিলান্যাস করা হচ্ছে।তাই নতুন করে আবারও আশায় বুক বাঁধছেন জিন্দাল প্লান্ট লাগোয়া বিভিন্ন গ্রামের মানুষ থেকে শুরু করে শালবনি বাসী।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এই পাওয়ার প্লান্ট হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে, উন্নয়ন হবে এলাকার, পরিবর্তন হবে এলাকার অর্থসামাজিক কাঠামোর। ফলে আবারো নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন শালবনীর মানুষেরা। তবে এলাকার মানুষের দাবি, বিগত দিনে জিন্দালের সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে এলাকার মানুষের থেকে কর্মসংস্থান হয়েছে বহিরাগত মানুষদের বেশি, তাই এই পাওয়ার প্লান্ট হলে যাতে করে যোগ্যতা অনুযায়ী এলাকার মানুষেরা কর্মক্ষেত্রে যাতে অগ্রাধিকার পায় সে ব্যাপারে উদ্যোগী হোক জিন্দাল কর্তৃপক্ষ থেকে রাজ্য সরকার উভয়েই। আর সেদিকে তাকিয়েই শালবনী ব্লকের হাজার হাজার মানুষ।

জিন্দাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ৮০০ মেগা ওয়াট করে দুটি পাওয়ার প্লান্ট তৈরি হতে চলেছে। এই প্রকল্প চালু হলে প্রত্যক্ষভাবে কর্মসংস্থান হবে প্রায় ৫০০০ মানুষের। প্রায় দু হাজার একর জমিতে তৈরি হবে এই পাওয়ার প্লান্ট।
