নিজস্ব সংবাদদাতা : "মানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না? ও বন্ধু... " এ যেন এক অনন্ত গান। সেই গানকেই বাস্তবে রূপ দিচ্ছে আন্তরিক চ্যারিটেবল সোসাইটি। শুধু নামেই নয়, গত পাঁচ বছর ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পদক্ষেপে তারা প্রমাণ করেছে, আন্তরিকতার শক্তি বদলে দিতে পারে অনেক অন্ধকার।

তাদের নবতম সংযোজন, বিনে পয়সার পাঠশালা 'পড়ার ঘর'। শালবনী ব্লকের শেষ প্রান্তে ভাদুতলার নিকটস্থ আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকা একটি গ্রাম কোড়াদানা। এই পাঠশালার মাধ্যমে গ্রামের প্রায় ১৩০ জন শিশু প্রতিদিন শিখছে নতুন কিছু। ওদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বই,খাতা, পেন্সিল আর স্বপ্ন দেখার সাহস। ওদের সামনে খুলে গিয়েছে এক আলোর জানালা। প্রতিদিন অক্ষরের আলোয় ভরে উঠছে শিশুগুলোর চোখ, মুখে ফুটে উঠছে উচ্ছ্বাসের দীপ্তি।

শুধু শিক্ষা নয়, প্রান্ত সীমায় আটকে থাকা জীবনকে সচল করতে তারা শিক্ষা ও সংস্কৃতির জোড়া ফলাকে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। তাই পাঠশালার পাশাপাশি তারা শুরু করেছে বিনে পয়সার নাচের ক্লাস 'আয় নাচ শিখি'। নাচ শেখাতে এগিয়ে এসেছেন নৃত্যশিল্পী পতত্রী দাস। শুধু কোড়াদানা নয়, পার্শ্ববর্তী গ্রামের বঞ্চিত শিশুরাও এখানে বিনামূল্যে শিখছে নাচ। তাল- লয়- ছন্দে দুঃখ দারিদ্র্যের আঁধার ভেঙে সেখানে জেগে উঠছে নতুন আনন্দের সুর। ছোট্ট ছোট্ট আলতা মাখা পায়ে ঘুঙুরের শব্দে ধীরে ধীরে ভেঙে যাচ্ছে নিস্তব্ধতার দেওয়াল।

আন্তরিক চ্যারিটেবল সোসাইটির সভাপতি মৈত্রেয়ী রায় বলেন, " আমাদের লক্ষ্য যেকোন সমস্যার স্থায়ী সমাধান। শিক্ষা হোক বা সংস্কৃতি, আমরা চাই ওরা আগামী দিনে যে কোন স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরে নিজের পায়ে দাঁড়াক। আমাদের সামর্থ্য খুব সীমিত। এরই মধ্যে অনবরত আমরা চেষ্টা করছি, আরও বেশি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। যাঁরা আমাদের পাশে থেকে কাজ করার অনুপ্রেরণা দেন, তাঁদের প্রত্যেককে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই"।
সোসাইটির সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু ঘোষ জানান, " মানুষের জন্য কাজ করতে হলে সর্বপ্রথম ভেতর থেকে সৎ ও নিঃস্বার্থ মানসিকতা তৈরি করতে হয়। আর প্রবল ইচ্ছেশক্তি থাকলে যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। আন্তরিক চ্যারিটেবল সোসাইটি এই বিশ্বাস থেকে এগিয়ে চলে"।