অরিন্দম চক্রবর্তী: পাঁচবেড়িয়া চার নম্বর ওয়ার্ডে লোহানীয়া সুকান্ত হিন্দি প্রাইমারি স্কুলে দীর্ঘদিনের শিক্ষক সংকট ও নানা অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকেরা। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৩০৯ জন পড়ুয়ার জন্য যেখানে ৮ জন শিক্ষক থাকা বাধ্যতামূলক, সেখানে হিন্দি বিভাগের রয়েছে মাত্র ৪ জন শিক্ষক এবং বাংলা বিভাগে ১ জন শিক্ষক। ফলে মোট ৫ জন শিক্ষক দিয়ে পুরো বিদ্যালয়ের পাঠদানের মান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি অভিভাবকদের।

অভিযোগ আরও গুরুতর—শিক্ষকের অভাবে নাকি চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়াদের দিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে বাধ্য করা হচ্ছে। এর ফলে ছোটদের পাশাপাশি বড়দের পড়াশোনাও বিপর্যস্ত। অনেক ছাত্রছাত্রী নিজেদের নাম লিখতে পারছে না, বই পড়তে পারছে না—এমন অভিযোগও তুলেছেন অভিভাবকেরা। একই ভবনে সকালে চলে হিন্দি মাধ্যম এবং দিনের বেলায় বাংলা মাধ্যমের পাঁচবেড়িয়া লোহানীয়া স্কুল। বাংলা মাধ্যমে পড়ুয়ার সংখ্যা ৪২৫ জন; শিক্ষক রয়েছেন মোট ৯ জন, পাশাপাশি একজন শিক্ষিকাকে অন্য স্কুল থেকে অস্থায়ীভাবে আনা হয়েছে। ফলে মোট শিক্ষক সংখ্যা ১০।

কিন্তু এখানেও এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিভাবকদের দাবি, বাংলা মাধ্যমের শিক্ষক জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী নাকি প্রায় প্রতিদিনই মদ্যপ অবস্থায় স্কুলে আসেন, যা ছাত্রছাত্রীদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। অভিযোগ আরও—মদের টাকার অভাবে নাকি মিড–ডে–মিল রুম থেকে চাল চুরি করে বাইরে বিক্রি করার ঘটনাও ঘটেছে। বিষয়টি সম্পর্কে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং খড়গপুরের এসআই দেবনাথ পান্ডাও অবগত আছেন বলে দাবি করেছেন অভিভাবকেরা। অবশ্য এসব অভিযোগ এখনো প্রশাসনিকভাবে প্রমাণিত নয়। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং হিন্দি মাধ্যম বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগসহ একাধিক দাবি তুলে সোমবার অভিভাবক এবং এলাকার শিক্ষানুরাগীরা এসআই দেবনাথ পান্ডা বাবুর কাছে লিখিত ডেপুটেশন জমা দেন। ডেপুটেশনের পর এসআই দেবনাথ পান্ডা সাংবাদিকদের জানান, অভিভাবকরা যে সমস্যাগুলির কথা তুলে ধরেছেন, তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডেপুটেশনে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক কামরুজ্জামান, খড়গপুর মাইনোরিটি ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক গুলাম আশিক, অধ্যাপক সৈয়দ সাদ্দাম আলী সমাজসেবী সেক সাইজাদা ও সেক ফারুক প্রমুখ। স্কুলের ভবিষ্যৎ ও শিক্ষার মান রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।