নিজস্ব সংবাদদাতা : আর জি কর কাণ্ডে জড়িত তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতার ছেলে৷ গত কয়েক দিন ধরেই সমাজমাধ্যমে এমনই দাবি ছড়িয়ে পড়েছে৷ এবার যাঁর চিকিৎসক পুত্রকে ঘিরে এই অভিযোগ ঘুরছে, তৃণমূলের সেই বর্ষীয়ান বিধায়ক এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও বিধায়ক ড:সৌমেন মহাপাত্র বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন৷ এ বার ও ফের পাঁশকুড়া ধর্ষণের ঘটনায় তাঁর নাম জড়াল। কিন্তু বার বার ছেলের নাম জড়ানোয় ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা সৌমেন মহাপাত্র। তাঁর দাবি, তাঁকে বদনাম করতেই তৃণমূলের একাংশ এই কুৎসা রটাচ্ছেন। পাঁশকুড়া ধর্ষণ কাণ্ডে ধৃত জাহির আব্বাস খানের মাথার উপরে ড:সৌমেন মহাপাত্র ছেলে বোধিসত্ত্ব মহাপাত্রের হাত ছিল বলে গুঞ্জন রটানো হচ্ছে। সমাজমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে এই সংক্রান্ত পোস্ট। যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বিধায়ক ড: সৌমেন মহাপাত্র ও তাঁর স্ত্রী সুমনা মহাপাত্র। তৃণমূলেরই একাংশ তাঁর ছেলের কুৎসা রটাচ্ছে— প্রকাশ্য সভা থেকে বিস্ফোরক মন্তব্য রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর। প্রয়োজনে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেন সৌমেন মহাপাত্র। বোধিসত্ত্ব মহাপাত্র এসএসকেএম থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। এসএসকেএমেই ইন্টার্ন এবং ট্রমা ইউনিটে দু’বছর হাউসস্টাফ করেছেন। তারপরে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে জিডিএমও–র চাকরি পান। বর্তমানে পাঁশকুড়া–১ এর বিএমওএইচ। পড়াশোনার জন্য এখন তিনি বাইরে রয়েছেন।

সম্প্রতি পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মধ্যে এক ওয়ার্ড গার্লকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় ঠিকাদার সংস্থার ফেসিলিটি ম্যানেজার জাহির আব্বাস খান। প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তমলুকের বিধায়ক ড:সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘জাহির আব্বাস ২০১৬ সাল থেকে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত। আমার ছেলে সে সময়ে চাকরি পায়নি। আমাদের দলের একাংশ আমার সঙ্গে না পেরে আমার ছেলের নামে কুৎসা করছেন। আমাদের দলের কিছু লোক সুযোগসন্ধানী। সবার আগে এঁদের চিহ্নিত করে দল থেকে বের করে দিতে হবে।তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্ত্রী দশ বছর কাউন্সলার ছিলেন। কোনও দিন বাড়িতে ঠিকাদারের দেওয়া কোনও জিনিস নিতে দিইনি। বলেছিলাম যেদিন বাড়িতে ওই সমস্ত জিনিস আসবে, সেদিন স্ত্রীকে ডিভোর্স দেব। আমার ছেলে বার্ষিক ১৫ কোটি টাকা বেতনে অস্ট্রেলিয়ায় চাকরির অফার পেয়েছে। জাহিরদের মতো দুষ্কৃতীদের টাকায় আমার ছেলের সংসার চলে না।’ তাঁর ভদ্রতাকে বোকামি মনে করছেন তৃণমূলের একাংশ বলে তিনি দাবি করেন। ড:সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘ভদ্রতা মানে ভাববেন না আমি খুব বোকা। আমি আমার স্ত্রী এতদিন দলের যত কর্মসূচির আয়োজন করেছি তার জন্য কারও কাছ থেকে এক টাকাও নিইনি। দুর্নীতির সঙ্গেও কোনও দিন আপোষ করিনি। প্রয়োজনে রাজনীতি ছেড়ে দেব। তাঁর অভিযোগ, দলেরই একাংশ তাঁদের পরিবারকে টেনে নামানোর চেষ্টা করছে। দলে থেকে দুর্নীতি করা কয়েকজন এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ তাঁর।