নিজস্ব সংবাদদাতা : মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো রাজ নারায়ণ বসু স্মারক বক্তৃতা—এক মননশীল ও ঐতিহ্যসমৃদ্ধ আলোচনা সভা। ভারতের জাতীয়তাবাদের পিতামহ হিসেবে খ্যাত ঋষি রাজনারায়ণ বসুর জন্মের দ্বি-শতবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের সূচনায় পরিবেশিত হয় রাজ্যসঙ্গীত। এরপর সম্মিলিত অতিথিদের উপস্থিতিতে চারাগাছে জল ঢালার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়—যা ছিল প্রকৃতি ও সংস্কৃতির প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিশ্রুতির প্রতীক।
সভাটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দীপক কুমার কর। তিনি ইতিহাস বিভাগের এই উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “এমন সময়োপযোগী আলোচনা আমাদের সমাজ, সংস্কৃতি ও শিক্ষাঙ্গনকে সমৃদ্ধ করে।” আলোচনা সভার আহ্বায়িকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বিদ্যাসাগর চেয়ার প্রফেসর’ অধ্যাপিকা কৌশিকী দাশগুপ্ত সুললিত কণ্ঠে প্রারম্ভিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এদিনের মূল প্রবন্ধ ছিল— “জাতীয়তার পিতামহ রাজনারায়ণ বসু: বর্তমান প্রেক্ষিতে প্রাসঙ্গিকতা”। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও লোকসংস্কৃতি গবেষক ড. মধুপ দে। তার পরিচিতি প্রদান করেন ইতিহাস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নির্মল মাহাতো। ড. মধুপ দে তাঁর বক্তব্যে ঐতিহাসিক তথ্য ও সমাজভাবনার সমন্বয়ে রাজনারায়ণ বসুর জীবন, চিন্তা ও ভারতীয় জাতীয়তাবাদের নির্মাণে তাঁর অসামান্য ভূমিকা তুলে ধরেন। বক্তৃতা শেষে শ্রোতাদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি, যা আলোচনা সভাকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও বাণিজ্য বিভাগের ডিন অধ্যাপক অরিন্দম গুপ্ত, সায়েন্স বিভাগের প্রাক্তন ডিন ও মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক সুব্রত দে, বিভাগের প্রাক্তনী শিক্ষক সুদীপ কুমার খাঁড়া সহ অন্যান্য বিশিষ্ট অধ্যাপকরা। সঞ্চালনায় ছিলেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. সৌরভ নস্কর। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অধ্যাপক শ্যামাপ্রসাদ দে। ছাত্রছাত্রী ও গবেষক স্কলারদের সক্রিয় উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি আরও সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। রাজনারায়ণ বসুর দ্বি-শত বর্ষে এমন ঐতিহাসিক আলোচনার আয়োজন নিঃসন্দেহে শিক্ষাঙ্গনে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা রেখে গেল।
