নিজস্ব সংবাদদাতা : বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলিতে দীর্ঘদিন ধরে চলা স্কলারশিপ বঞ্চনা ও অযৌক্তিক সেমিস্টার ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাল ভারতের ছাত্র ফেডারেশন (এস এফ আই )বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় লোকাল কমিটি।সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছ, আর্থিকভাবে দুর্বল বহু ছাত্রছাত্রী এখনও পর্যন্ত স্কলারশিপের টাকা পায়নি। অনেক তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া পাসআউট হয়ে গেলেও তাদের বকেয়া মেটানো হয়নি। উপরন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের “উদাসীনতা” পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।শুধু তাই নয়, হঠাৎ করেই কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে ব্যাপক সেমিস্টার ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভর্তিতে পিজি কোর্সে প্রায় সব ডিপার্টমেন্টের ফি দ্বিগুণ করা হয়েছে। এস এফ আই অভিযোগ করেছে, স্কলারশিপের পরিমাণ বাড়ানো তো দূরের কথা,রাজ্যের সরকার ধীরে ধীরে বিভিন্ন স্কলারশিপ কার্যত বন্ধ করে দেওয়ার পথে হাঁটছে।বর্তমানে স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিনস (বিকাশ ভবন) স্কলারশিপ, বহু ক্ষেত্রে ঐক্যশ্রী ও কন্যাশ্রী, এমনকি গবেষকদের স্টাইপেন্ড পর্যন্ত মাসের পর মাস আটকে আছে। এর ফলে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য ছাত্রছাত্রী বিপাকে পড়েছে। এস এফ আই এর আরও অভিযোগ,শিক্ষাক্ষেত্রকে নিয়ন্ত্রণ করছে “তৃণমূলের গুণ্ডা-ক্রিমিনাল সিন্ডিকেট”। সংগঠনের দাবি,গত ১২ই আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ভিসি অফিসের সামনে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আক্রমণ চালায়, যেখানে খোদ রেজিস্ট্রার মদত দেন। আবার ১৯ শে আগস্ট বিকাশ ভবনে গেলে পুলিশের বর্বর আক্রমণের মুখে পড়তে হয় আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের।এস এফ আই নেতৃত্বরা বলেন “এই রাজ্যে উচ্চশিক্ষা কর্মসংস্থান, গবেষণা সবই ধ্বংসের মুখে। সরকারি কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে না, WBJEE-এর ফলাফল প্রকাশ হচ্ছে না, NEET-এর কাউন্সেলিং বন্ধ, স্কলারশিপ দেওয়া বন্ধ, আর বেসরকারি কলেজ-ইউনিভার্সিটিগুলি রাজ্যের মদতেই ইচ্ছামতো ভর্তি ও ফি আদায় করছে।”এস এফ আই দাবি করেছে,১. স্কলারশিপ বিতরণে সমস্ত জটিলতা ও বিলম্ব অবিলম্বে কাটিয়ে উঠতে হবে,২. বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি স্বচ্ছ ও নির্দিষ্ট Help Desk চালু করতে হবে,৩. এতদিন যারা স্কলারশিপ বঞ্চিত হয়েছে, তাদের দ্রুত বকেয়া প্রদান করতে হবে।৪. ভবিষ্যতে স্কলারশিপ প্রদানের নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে কঠোরভাবে পালন করতে হবে।৫. আর্থিকভাবে দুর্বল ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব Student Aid Fund চালু বা শক্তিশালী করতে হবে।৬. অযৌক্তিক সেমিস্টার ফি বৃদ্ধি অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।৭.স্কলারশিপের পরিমাণ বৃদ্ধি করে সমস্ত ছাত্রছাত্রীকে এর আওতায় আনতে হবে।৮. দ্রুত সমস্ত কলেজে UG ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ক্লাস শুরু করতে হবে।৯. PG ভর্তিতে প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে স্বচ্ছভাবে ভর্তি নিতে হবে।এস এফ আই-এর পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে,যদি অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান না হয়, তবে তারা বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলনের পথে হাঁটবে।তাদের স্পষ্ট বার্তা শিক্ষা কোনো ব্যবসার পণ্য নয়, শিক্ষা সবার অধিকার।