নিজস্ব সংবাদদাতা : ভিটামিন সিরাপের সিল করা শিশির ভিতরে মাকড়সা জাতীয় একটি পোকা ভাসতে দেখা যাওয়ায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল হুগলির তারকেশ্বরে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ ও উদ্বেগে ফুঁসছে স্থানীয় বাসিন্দারা। আপাতত সংশ্লিষ্ট ভিটামিন সিরাপটি বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারকেশ্বর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক। জানা গেছে, তারকেশ্বরের বাসিন্দা অশোক ও পায়েল বসাকের মাসদুয়েকের সন্তানকে গত শুক্রবার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান বাবা-মা। চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ডি-থ্রি সিরাপ খাওয়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর স্থানীয় একটি ওষুধের দোকান থেকে ওই ভিটামিন সিরাপটি কেনা হয়। খুদেকে খাওয়ানোর প্রস্তুতির সময় সিল করা শিশি হাতে নিয়েই আঁতকে ওঠেন মা। তাঁর চোখে পড়ে শিশির ভিতরে মাকড়সার মতো একটি পোকা ভাসছে। সৌভাগ্যবশত, শিশুকে ওষুধ খাওয়ানোর আগেই বিষয়টি নজরে আসে। ফলে খুদে কোনও শারীরিক সমস্যায় পড়েনি বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

ঘটনার খবর ছড়াতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। পরিবারটির পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে আপাতত ওই ভিটামিন সিরাপের বিক্রি বন্ধ করা হয়েছে এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।উল্লেখ্য, এর আগেও হুগলি, বর্ধমান এবং কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সন্দেহভাজন ও নকল ওষুধ উদ্ধারের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র ও রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০০টি ওষুধকে ‘জাল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তালিকায় রয়েছে প্রেসারের ওষুধ টেলমা এএম, ডায়াবেটিসের ওষুধ, ইনহেলার, ইনজেকশন-সহ বহুল ব্যবহৃত একাধিক ওষুধ। সাধারণ মানুষ যাতে প্রতারিত না হন, সেই লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)-এর তরফে কিউআর কোড পাঠানো হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যভবনে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওষুধ দোকানে নতুন কোনও ওষুধ এলে তার কিউআর কোড স্ক্যান করে বিস্তারিত যাচাই করতে হবে। স্ক্যানে যদি চিহ্নিত ৩০০টি নকল ওষুধের সঙ্গে কোনও মিল পাওয়া যায়, তবে সেটিকে নকল বলে ধরে নিতে হবে। পাশাপাশি, গ্রাহকদের সচেতন করতে দোকানে কিউআর কোড ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভিটামিন সিরাপে মাকড়সা সদৃশ পোকা পাওয়ার ঘটনা সাধারণ মানুষের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিল। স্বাস্থ্য দপ্তরের দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপের দিকেই তাকিয়ে এলাকাবাসী।