নিজস্ব সংবাদদাতা : রাজ্যের সবকটি জেলা পরিষদ, ৯৮ শতাংশ পুরসভা, ২৯ জন লোকসভা সদস্য, ২১৫ জন বিধায়ক —এই মুহূর্তে বিপুল সাংগঠনিক ক্ষমতার অধিকারী তৃণমূল। এই সুযোগে দলকে সামনে রেখে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কেউ কেউ। আজ, ২১ জুলাই শহিদ তর্পণের মঞ্চ থেকেই সেই সুযোগসন্ধানীদের ভাগ্যে জুটতে পারে স্বয়ং দলনেত্রীর ‘চপেটাঘাত’। কড়া বার্তা দিতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়—শৃঙ্খলাই হল শেষ কথা। দলীয় শৃঙ্খলা যিনি মানবেন না, তিনি চলে যেতে পারেন। দরজা খোলা রয়েছে। দুষ্টু গোরুর চেয়ে, গোয়াল শূন্য রাখাই শ্রেয় মনে করছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
রবিবার ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে হবে তৃণমূলের শহিদ তর্পণের কর্মসূচি। বিশাল মঞ্চ ইতিমধ্যেই প্রস্তুত। সেখানেই ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই পুলিসের গুলিতে মৃত ১৩ জন শহিদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিনের মাহাত্ম্য তুলে ধরে শনিবার নেত্রী জানিয়েছেন, ‘একুশে জুলাই বাংলার ইতিহাসের রক্ত ঝরা একটা অধ্যায়। অত্যাচারী সিপিএমের নির্দেশে, সেদিন চলে গিয়েছিল তরতাজা ১৩টি প্রাণ। হারিয়েছিলাম আমার ১৩ জন সহযোদ্ধাকে। তাই একুশে জুলাই আমার কাছে, আমাদের কাছে একটা আবেগ। একুশে জুলাই বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতির অন্তরঙ্গ অংশ। প্রতিবছর এই ঐতিহাসিক দিনে শ্রদ্ধায়, ভালোবাসায় আমরা সেই বীর শহিদদের তর্পণ করি। দেশ ও দশের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে এই দিনে স্মরণ করি।’ ঐতিহাসিক এই দিনে বাংলার সকল মানুষকে ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মমতা। এই দিনটিকে ‘মা-মাটি-মানুষ দিবস’ হিসেবেও পালন করে তৃণমূল। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে যে জয় এসেছে, তা আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের উদ্দেশে উৎসর্গ করা হবে।
আজকের মঞ্চ থেকেই আগামী লড়াইয়ের বার্তাও দেবেন তৃণমূল নেত্রী। ঘোষণা করবেন দলের পরবর্তী কর্মসূচি। রাজনৈতিক দিক থেকেও এবারের একুশে জুলাইয়ের গুরুত্ব একটু আলাদা হতে চলেছে। দলীয় সূত্রের খবর, এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে মূল ফোকাস থাকবে দলীয় সংগঠন-শৃঙ্খলার উপর। শৃঙ্খলারক্ষায় নেত্রী কড়া বার্তা দিতে প্রস্তুত।
ইদানীং কালে তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলার, পুর চেয়ারম্যান, বিধায়কদের বিরুদ্ধে ভূরিভূরি অভিযোগ উঠেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভূক্তভোগী সাধারণ মানুষ। সেই সমস্ত ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সমস্যা সমাধানে দলীয় সংগঠনে একাধিক রদবদলের খবরও রয়েছে রাজ্যের শাসক শিবিরের অন্দরে।