পূর্ব মেদিনীপুর নিজস্ব সংবাদদাতা : পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লাইফলাইন হলদিয়া মেছেদা রাজ্য সড়কের দুধারে থাকা সমস্ত অবৈধ দখলদারীদের জায়গা খালি করার চরম সময়সীমা জানিয়ে দিল পূর্ত ও সড়ক বিভাগ। এই গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়কের দুই পাশের অবৈধ দখলদারদের দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ জানিয়ে প্রচার শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল (Haldia) থেকে রাজ্য সড়ক জুড়ে মাইক প্রচার শুরু হতেই ব্যাপক আলোড়ন পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। পূর্ত ও সড়ক বিভাগের দাবী, বর্তমানে যানবাহনের মাত্রা ব্যাপক হারে বেড়েছে, আর সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দুর্ঘটনার পরিমান। এর জেরেই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি দ্রুত সম্প্রসারণের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সেই কারনেই অবৈধ দখলদারদের দ্রুত সরে যাওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। শুক্রবার মাইক প্রচার করে জানানো হয়েছে, হলদিয়া মেছেদা রাজ্য সড়কের পার্শ্ববর্তী জায়গার ওপর যে সমস্ত স্থায়ী ও অস্থায়ী ব্যবসায়ী ও অবৈধ দখলদার রয়েছেন তারা যেন দ্রুত নিজেদের উদ্যোগে সরকারী জায়গা খালি করে দেন। শুধু অবৈধ কাঠামোই নয়, যারা ব্যবসা ও ব্যক্তিগত কারণে নির্মাণ সামগ্রী, কাঠ, ব্যক্তিগত ও বানিজ্যিক গাড়ি প্রভৃতি রেখেছে তাঁদেরও দ্রুত এগুলি সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে জায়গাগুলি খালি না করে দিলে পূর্ত ও সড়ক বিভাগের তরফ থেকে প্রয়োজনে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শুক্রবার নির্দেশ প্রচার শুরু হতেই ব্যবসায়ীদের মধ্যে রীতিমতো আলোড়ন শুরু হয়ে গিয়েছে। গত কয়েক দশক ধরে হলদিয়া মেছেদা রাজ্য সড়কের দু’দিকে গজিয়ে উঠেছে হাজার হাজার দোকান, বাজার, মার্কেট কমপ্লেক্স। এবার দ্রুত সেই কাঠামো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ আসার পরেই ব্যবসায়ীরা রীতিমতো চিন্তিত। তবে পূর্ত ও সড়ক বিভাগ সূত্রে দাবী, রাস্তা সম্প্রসারণের বিষয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রস্তুতি চলছে। এই বিষয়ে ব্যবসায়ীদেরও বহুবার সতর্ক করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদও করা হয়েছে। কিন্তু পরে তারা আবারও রাস্তা দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এবার রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরুর পথে। তাই শেষবার এই জবরদখলকারীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ জারি করা হল। পূর্ত ও সড়ক বিভাগের তমলুকের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কার্ত্তিক চন্দ্র দাস জানিয়েছেন, “হলদিয়া মেছেদা রাজ্য সড়কের তমলুকের নিমতলা থেকে হলদিয়ার মঞ্জুশ্রী মোড় পর্যন্ত প্রায় ৩৮.৫০কিমি রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু হচ্ছে। সেই সঙ্গে মঞ্জুশ্রী থেকে দুর্গাচকে রাস্তার দু’দিকে কিছুটা চওড়া হচ্ছে। এই প্রকল্পে খরচ হচ্ছে প্রায় ৭৬ কোটি টাকা। আগামী ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে” বলে জানিয়েছেন তিনি। কার্ত্তিক চন্দ্র দাস আরও জানান, “এই মুহূর্তে তমলুক থেকে মঞ্জুশ্রী পর্যন্ত মূল রাস্তাটি ৭ মিটার চওড়া রয়েছে। যা এরপর বেড়ে দাঁড়াবে ১০ মিটার। এছাড়াও রাস্তার দু’দিকে প্রয়োজন মতো ফুটপাত থাকবে”। তবে এরই পাশাপাশি বাজার এলাকাগুলিতে রাস্তার দুদিকে ড্রেনেজ তৈরিরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে খবর। সেই হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্য সড়কের দু’দিকে বিপুল পরিমানে জায়গা খালি করার প্রয়োজন রয়েছে বলেই সূত্রের খবর।
