Skip to content

প্রয়াত মেদিনীপুরের তরুণ আবৃত্তি শিল্পী অনুভব পাল!

নিজস্ব সংবাদদাতা : ২৪শে মে শনিবার দুপুর গড়িয়ে বিকেলে খবরটা ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নামলো মেদিনীপুর শহরে। শনিবার দুপুরে কলকাতার কোঠারীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রয়াত হলেন মেদিনীপুরের শহরের উদীয়মান আবৃত্তি শিল্পী অনুভব পাল।এবারের মাধ্যমিকে ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে অনুভব নিজের স্কুল মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের একাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন।অনুভব ছোট থেকেই স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফিন টাইপ টু নামক জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিল চোখে।শিশু কিশোর একাডেমি থেকে রাজ্যে সেরা শিল্পীর মর্যাদাও পেয়েছিলেন। তাছাড়া জেলা ও রাজ্য স্তরের একাধিক আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও মনের ইচ্ছায় আবৃত্তি অনুশীলন চালিয়ে যেতেন। আবৃত্তির হাতেখড়ি মেদিনীপুরের বিশিষ্ট শিল্পী সুতনুকা মিত্র মাইতির কাছে।

বাবা ধীরেন পাল একজন পার্শ্ব শিক্ষক।মা ইন্দ্রানী পাল একজন প্রাথমিক শিক্ষিকা। সমস্ত বাধা বিপত্তি কাটিয়ে বাবা- মা নিয়মিত নিয়ে যেতেন স্কুলে ।নিয়ে যেতেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা প্রতিযোগিতায়। এবারের রবীন্দ্র স্মৃতি সমিতির বর্ষবরণ অনুষ্ঠানেও অংশ নিয়েছেন অনুভব। গত একমাসে দুবার সার্জারি হয় অনুভবের। সেই অবস্থাতেই হাসপাতালের বেডে শুয়ে আবৃত্তি করেছেন অনুভব। দ্বিতীয় বার সার্জারির পর সমস্যা হচ্ছিল। শেষমেষ ভেন্টিলেশনে দিতে হয়েছিল। ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় শনিবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অনুভব। শনিবার রাত নটা নাগাদ অনুভবের দেহ কলেজিয়েট স্কুলে পৌঁছালে সেখানে তাকে শ্রদ্ধা জানাতে ভীড় করেন বহু মানুষ। শ্রদ্ধা জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হিমানী পড়িয়া সহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকার এবং অনুভবের সতীর্থরা। শ্রদ্ধা জানান বিধায়ক সুজয় হাজরা,পিএমডিসিসিআই এর সম্পাদক চন্দন বসু,এবিটিএ-এর জেলা সম্পাদক জগন্নাথ খান,নয়ন পত্রিকার সম্পাদক বিদ্যুৎ পাল,সময় বাংলার কর্ণাধার জয়ন্ত মন্ডল, রবীন্দ্র স্মৃতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র ওঝা, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ সেন, সমাজকর্মী অভ্রজ্যোতি নাগ, শিক্ষক সুদীপ কুমার খাঁড়া, প্রধান শিক্ষক সুভাষ জানা, সমাজকর্মী সোমজিৎ মাইতি সহ মেদিনীপুরের সংস্কৃতি জগৎ ও অন্যান্য ক্ষেত্রের বিশিষ্ট জনেরা এবং অনুভবের গুণমুগ্ধরা।

স্কুল থেকে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে সেখানে শ্রদ্ধা জানান কাউন্সিলের সৃজিতা দে বক্সী সহ অন্যান্যরা।বাড়ি থেকে মরদেহ রাত ১১ টা নাগাদ পদ্মাবতী শশ্মানে পৌঁছায় এবং সেখানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হিমানী পড়িয়া বলেন, "সবদিক দিয়েই অনুভব গুণী ছিল। এক সম্ভাবনাময় শিল্পী ও ছাত্র অকালেই চলে গেল। আমদের সকলের মন খুব খারাপ। আমাদের সকলের খুব প্রিয় ও আদরের ছিল অনুভব!'। এমন একজন প্রতিভাবান ছাত্র ও আবৃত্তিশিল্পী প্রয়াণে শোকের ছায়া গোটা শহর জুড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ করেছেন বহু মানুষ।

Latest