ঢাকা, জাকির হোসেন: ইসকনের নেতা ও বাংলাদেশের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারি ও এর পরবর্তী আন্দোলন-সংঘর্ষ ঘিরে উত্তাল বাংলাদেশ। ইসকনের সাধুর গ্রেপ্তারি এবং তাঁর জামিন না পাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার বার্তা দেওয়া হয়েছে ভারতের তরফে। এবার পাল্টা বিবৃতি বাংলাদেশের। ইউনূস সরকারের তরফে দাবি করা হল, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতারির ঘটনাকে ভুলভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। ভারতের বিবৃতি দুই দেশের বন্ধুত্বের পরিপন্থী বলেও দাবি করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে। সোমবার ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলাদেশে বসবাসকারী সংখ্যালঘুরা। প্রতিবাদে সরব হয় তারা। ভারত সরকারের তরফেও ইসকন নেতার গ্রেপ্তারি এবং জামিন মঞ্জুর না হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
মঙ্গলবার রাতেই এই বিবৃতির পাল্টা বিবৃতি জারি করে বাংলাদেশ সরকার। ইউনূস সরকার জানিয়েছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিবৃতি জারি করেছে ভারত। বিবৃতিতে বলা হয়, “অত্যন্ত হতাশা ও দুঃখের সঙ্গে সরকার লক্ষ্য করছে যে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারির ঘটনাকে কিছু মহল ভুলভাবে তুলে ধরছে। এটি প্রতিবেশি দুই দেশের বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়ার পরিপন্থী।” বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে জনগণের উপরে যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অপরাধ চলে আসছিল, বর্তমান সরকার তা শেষ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সংখ্যালঘুদেরও একই নজরে দেখা হয়। কিন্তু ভারতের বিবৃতিতে এই বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে বলেই আক্ষেপ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশ সরকার ধর্ম, জাত-পাত নির্বিশেষে সকলকে মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করছে এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও সরকারের দায়িত্ব। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন, সরকার তাতে হস্তক্ষেপ করে না বলেই জানিয়েছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে গতকাল সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন-৬ এর কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে তোলা হলে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। তবে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পথে তার অনুসারীরা বাধা দেয়। প্রায় তিন ঘণ্টা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে তাদের হট্টগোল ও সংঘর্ষ চলে।