Skip to content

দাবার বোর্ডে খেলতে খেলতেই মৃত্যুকে বরণ করলেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি গ্র‍্যান্ডমাস্টার জিয়াউর!

ঢাকা জাকির হোসেন : বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব অর্জনকারী তিনি, বাংলাদেশের দাবাকে নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়৷ আর ৫ জুলাই শুক্রবার দাবার কোর্টেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন জিয়াউর রহমান৷ ২০০৫ সালে বাংলাদেশি দাবাড়ুদের মধ্যে সর্বোচ্চ ফিডে রেটিং অর্জন করেছিলেন তিনি। দেশে-বিদেশে অসংখ্য প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়েছেন এই দাবাড়ু। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত ক্রীড়া জগত। শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোক জানিয়েছেন ক্রীড়া জগতের সঙ্গে যুক্তরাও। আরেকজন জিয়া তথা জিয়ার বিকল্প কি বাংলাদেশে তৈরি হবে তা নিয়েও তাঁরা প্রশ্ন করছেন। জানা গিয়েছে, এ দিন দাবার কোর্টে পাশের টেবিলেই খেলছিলেন জিয়র ছেলে তাহসিন তাজওয়ার জিয়াও।

৫ জুলাই শুক্রবার বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনে জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ড চলার সময়েই হঠাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন জিয়াউর। সেখানে গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন জিয়া। ৫০ বছর বয়সী এই গ্র্যান্ডমাস্টার লুটিয়ে পড়তেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় শাহবাগের ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল তথা বারডেমে। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

২০০২ সালে নিয়াজ মোর্শেদের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব অর্জন করেন জিয়াউর রহমান। ৫ জুলাই খেলা চলাকালীন বিকাল ৫টা ৫০ মিনিট নাগাদ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন জিয়াউর। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন জিয়া।

তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জানান, জিয়াউরের মৃত্যু ক্রীড়াঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। বাংলাদেশে দাবার উন্নয়নে তাঁর অবদান বাংলাদেশের ক্রীড়াজগতে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মতোই গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউরের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন। এই দাবাড়ুর মৃত্যুকে দেশের ক্রীড়াজগতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

জিয়াউর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। ১৯৯৩ সালে দাবার আন্তর্জাতিক মাস্টার খেতাব পান জিয়া। ২০০২ সালে অর্জন করেন গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব।

পারিবারিকভাবে জিয়া ছিলেন একজন দাবাড়ু। তার বাবা পয়গামউদ্দিন আহমেদের পথ ধরেই স্কুলজীবন থেকে দাবার সঙ্গে সম্পৃক্ত হন জিয়া। তাঁর ছেলে তাহসিন তাজওয়ার জিয়াও পেশাগতভাবে দাবাড়ু। শুক্রবার ওই ম্যাচ চলার সময় তাঁর স্ত্রী লাবণ্যও ছিলেন ফেডারেশনে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে জিয়ার।

সেই সময়ে ঠিক তাঁর পাশের টেবিলেই খেলছিলেন তাঁর ছেলে তাহসিন তাজওয়ার জিয়া। জিয়ার সাথে সেদিন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে খেলা দাবাড়ু এনামুল হোসেন রাজীব জানিয়েছেন, খেলার সময়ে জিয়াকে দেখে বোঝাই যায়নি যে তিনি অসুস্থ। এনামুল বলেন, ‘হঠাৎ করে দাবার বোর্ডেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। যখন জিয়া লুটিয়ে পড়ছিলেন, আমি ভেবেছিলাম তিনি নিচু হয়ে জলের বোতল তুলছেন। এরপরেই তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে পড়ে যান। তখন পাশের টেবিলে খেলছিল তাঁর ছেলে।

দাবা খেলতে খেলতেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন বিশ্বখ্যাত দাবাড়ু জিয়াউর রহমান৷ পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে এই কিংবদন্তিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক

Latest