নিজস্ব সংবাদদাতা : শনিবার ৯ই নভেম্বর ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামে এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।রিচাকে সম্মান জানাতে বসেছিল চাঁদের হাত। ক্রিকেটের নন্দনকাননে যেন বিশ্বজয়ের ঢাক বাজল শনিবার, রিচাকে কেন্দ্র করে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, ঝুলন গোস্বামী— কে ছিলেন না! যেন চাঁদের হাট।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ঝুলনরা জীবন পাত করেছে এই দিনটার জন্য। একটুর জন্য পারেনি। রিচারা পেরেছে। ওদের কর্মের ফল এটা। ওকে এই জায়গা তৈরি করে দেওয়ার জন্য শ্যামা দেবীকে অভিনন্দন। রিচা সহ ভারতীয় দলকে শুভেচ্ছা। বাবা-মা, বন্ধু-বান্ধব, কোচের সাহায্য না থাকলে এই জায়গায় পৌঁছতে পারত না। গৌতম দেবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। শিলিগুড়িতে বড় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। রিচার বয়স অল্প। আমি মনে করি সাফল্যের রহস্য প্রকাশ্যে আনতে নেই। অনেকের টেকনিক্যাল পয়েন্ট থাকে। নিজস্বতা থাকে। এবার যে প্রক্রিয়া কাজে লাগিয়েছে, পরের বার অন্য প্রক্রিয়া হতে পারে। আমি চাই মেয়েরা আরও এগিয়ে যাক। রিচার প্রশংসা করতে গিয়ে এক অজানা গল্প শেয়ার করলেন প্রাক্তন অধিনায়ক ঝুলন গোস্বামী।
রিচা ঘোষ। বয়স মাত্র ২২ বছর। কিন্তু, এই বয়সেই তিনি সাফল্য়ের যে শৃঙ্গ অর্জন করে ফেলেছেন, সেটা বাংলার রথী-মহারথীরা আজ পর্যন্ত পারেননি। আজ পর্যন্ত কোনও বাঙালি ক্রিকেটার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পাননি। গোটা বাংলায় একমাত্র বিশ্বকাপ পদকটি রিচার বাড়িতেই রয়েছে। কীভাবে উত্থান হল শিলিগুড়ির এই তারকা ক্রিকেটারের?প্রাক্তন অধিনায়ক ঝুলন গোস্বামী বললেন, সালটা ছিল ২০১৩। ভারতীয় ক্রিকেট দল একেবারেই ভাল পারফরম্য়ান্স করতে পারছিল না। বঙ্গ ক্রিকেটের অবস্থাও ছিল তথৈবচ। সেই সময় আমি খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। তৎকালীন সিএবি সচিব বিশ্বরূপ দে, বাবলু স্যার, গৌতম স্যারের কাছে আমি একটা বিশেষ অনুরোধ করেছিলাম। জানতে চেয়েছিলাম, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রতিভা অন্বেষণের কাজ শুরু করতে পারি কি না? সেইসময় ওঁরা পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমার প্রস্তাবে সহমত পোষন করেছিলেন।

সেইসময় আমরা শিলিগুড়িতে গিয়েছিলাম। আর তখনই প্রথমবার দেখেছিলাম রিচাকে।এখানেই শেষ নয়। টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন পেস বোলার আরও বলেন, 'অনূর্ধ্ব ১৫-১৬ ট্রায়ালে একটা বাচ্চা মেয়েকে আমরা দেখেছিলাম। ওকে দেখেই আমি বলেছিলাম, আমাদের কাছে প্রচুর প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছে। তাদের যদি একটু সাপোর্ট করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই তারা দেশের হয়ে খেলতে পারবে। এরপর ওই প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি থেকে প্রচুর মহিলা ক্রিকেটারদের আমরা পেয়েছিলাম।

আর সেখান থেকেই রিচার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় হয়েছিল। আজ বলতে কোনও বাধা নেই, রিচার মধ্যে এত প্রতিভা রয়েছে যে ওই বয়সে অন্য কোনও ক্রিকেটারের মধ্যে আমি দেখিনি।'তিনি বললেন, 'যখন প্রথমবার রিচা বাংলা ক্রিকেট দলের জন্য নির্বাচিত হল, সেইসময় সিএবি প্রেসিডেন্ট ছিলেন সৌরভ স্যার। আমিই ওকে সিনিয়র দলে খেলানোর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। প্রাথমিকভাবে এই প্রস্তাবে সাড়া না পেলেও, পরবর্তীকালে সকলেই তা মেনে নেন। তারপর তো বাকিটা ইতিহাস।