নিজস্ব সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাংবাদিক সম্মেলন কেন করেন না দশ বছরে? ঘটা করে সংবাদ সম্মেলন ডেকে গুচ্ছের সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দেন না। ভোট চলাকালীন অনুগত এক নিউজ চ্যানেলের পরিচিত চার সাংবাদিককে ব্যাখ্যা শুনিয়ে বলেন, তিনি একমাত্র সংসদের কাছেই দায়বদ্ধ। অর্থাৎ, আর কারও কাছে তিনি বাধ্য নন জবাবদিহিতে। যেখানে দায়বদ্ধতা নেই, সেখানে বাধ্যবাধকতাও নেই। তাই সে যাই হোক, – এই প্রথম সে নিয়ে কিছু অন্তত মুখ থেকে শোনা গেল। তিনি বলেছেন, ইদানীং সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের চরিত্র পুরো বদলে গিয়েছে। এখনকার সাংবাদিকতা নিরপেক্ষ নয়। পক্ষপাতদুষ্ট। সাংবাদিকরা প্রত্যেকেই নিজস্ব অভিমতের মধ্যে আবদ্ধ। তারা নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে কিছু দেখতে চান না। বলতে চান না। লিখতেও চান না। ‘নিরপেক্ষতা’ বলে যে-বিষয়টা আগে (কত আগে তা অবশ্য বলেননি) ছিল, এখন তা নেই। বিষয়টা কীরকম, প্রধানমন্ত্রী সেই উদাহরণও দিয়েছেন। উপস্থিত চার অনুগতের একজনের
নাম করে বলেছেন– যেমন ধরুন, আপনাকে সাক্ষাৎকার দিতে বসলেই লোকে বলবে, ওঃ, অমুক? উনি তো দু’দিন আগে ওই বিষয়ে টুইট করেছিলেন। তিনি তো মোদির পক্ষেই কথা বলবেন! প্রধানমন্ত্রী এখানেই থেমে থাকেননি। বরং ‘আগেকার’ সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘এখনকার’ সাংবাদিকদের পার্থক্য কেমন সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, আগে মিডিয়া (সাংবাদিকরা) ছিল ‘ফেসলেস’। অবয়বহীন। মানে, কে লিখছেন, তার আদর্শ বা রাজনৈতিক মতাদর্শ কী, তা নিয়ে কেউ মাথা ঘামাত না। হালে স্পষ্ট বোঝা যায় কার কী আদর্শ। কার রাজনীতি কেমন। বলেছেন, কিছু বছর আগেও ধারণা ছিল, মিডিয়াকে হাতে রাখলেই সব হয়ে যায়। মিডিয়াকে কিছু জানিয়ে দিলেই সারা দেশে তা ছড়িয়ে যাবে। তারাই প্রচার করে দেবে। তার কথায়, ‘আমি এক অন্য সংস্কৃতি তৈরি করেছি। খাটতে হবে। পরিশ্রম করতে হবে। গরিবের কাছে যেতে হবে। আমি তো বিজ্ঞান ভবনে ফিতে কেটে ছবি তুলে মিডিয়া মারফত প্রচার করে, দিন কাটাতে পারতাম। কিন্তু তা না করে আমি ঝাড়খণ্ডের অনামী গ্রামে গিয়ে ছোট প্রকল্পের জন্য কাজ করেছি। এটাই নতুন সংস্কৃতি। আমার কাজ মিডিয়ার পছন্দ হলে প্রচার করবে, না চাইলে করবে না।’ তাহলে কী বোঝাতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী?প্রসঙ্গ, মিডিয়া’ যদি এত গুরুত্বহীন হয়ে থাকে তাহলে দশ বছরে যে টাকা মনমোহন সিং খরচ করেছেন ২০১৪-এ ক্ষমতায় এসে তিনি সাড়ে চার বছরে ৫হাজার কোটি টাকা সরকারি বিজ্ঞাপনে খরচ করেছেন। ২০২৩ সালের জুলাই মাসের। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক রাজ্যসভায় জানায়, ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর চার বছরে সরকার বিজ্ঞাপন মারফত খরচ করেছে ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। সবচেয়ে বেশি পেয়েছে প্রিন্ট মিডিয়া।
'নিষ্প্রয়োজন' মিডিয়া তাঁর কাছে , কেন বললেন প্রধানমন্ত্রী?
