নিজস্ব প্রতিবেদন: আত্মনির্ভরতায় রয়েছেন, কিন্তু আত্মপ্রচারে নেই—তিনি ডঃ শান্তনু ভৌমিক। ঝাড়গ্রাম শহরের কদম কাননে শান্তনুবাবুর ছোট্ট বাড়ি। জীবনযাপনও সাদামাটা। খড়্গপুরের সাউথ-ইস্টার্ন রেলওয়ে বয়েজ হাই স্কুলের এই প্রাক্তনী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরম ভক্ত। বর্তমানে তামিলনাড়ুর অমৃত বিশ্ব বিদ্যাপীঠমের অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক নিরলস কাজ করে চলেছেন ভারতের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে। দেশীয় প্রযুক্তিতে বানিয়েছেন বুলেট প্রুফ বর্ম। উৎসর্গ করেছেন নেতাজির নামে। সিয়াচেনে প্রবল ঠান্ডা ও শত্রুপক্ষের সঙ্গে লড়াইয়ে সেনাদের শক্তি জোগাতে আবিষ্কার করেছেন তাঁবু। সেটিও সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে। আর তা উৎসর্গ করেছেন রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের নামে, ‘লক্ষ্মীবাঈ আর্মার’। শান্তনুবাবু মনেপ্রাণে চান, আত্মনির্ভরতার পথ ধরে বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্র হয়ে উঠুক তাঁর প্রিয় ভারতবর্ষ। তাঁর সবক’টি সৃষ্টি উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা মহলে। শান্তনুবাবুর কাজের প্রশংসা করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালও। এর আগে দেশীয় প্রযুক্তিতে সেনা জওয়ানদের জন্য বুলেট প্রুফ জ্যাকেট তৈরি করে তাক লাগিয়েছিলেন তিনি। এ বার ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য অগ্নিনিরোধক জাহাজ বা সাবমেরিন তৈরিতে এগিয়ে এসেছেন। আদতে ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা এই বিজ্ঞানী শান্তনু ভৌমিকের অধীনে এ বিষয়ে গবেষণা করার জন্য ইতিমধ্যে নাম নথিভুক্ত করেছেন কোচির নেভাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যারোনেটিক্যাল টেকনোলজির দুই অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডান্ট শ্রবণকুমার খুন্তিয়া এবং জিতিন যোশী। উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন সিরামিক এবং স্টিল কম্পোজিট উপাদানকে কী ভাবে নৌবাহিনীতে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে গবেষণা করবেন নৌবাহিনীর ওই দুই অফিসার। এজন্য কোয়েম্বাটুরের অমৃতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে নৌবাহিনীর একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে ১৯ ডিসেম্বর। ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ অ্যান্ড প্রজেক্টের বিভাগীয় প্রধান শান্তনু। তাঁর দাবি, এর ফলে দেশের নৌবাহিনীতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসতে চলেছে। এতে দেশের অর্থ যেমন বাঁচবে, তেমনি সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তির দ্বারা নৌবাহিনীর জাহাজ ও চালকহীন প্লেন তৈরি সম্ভব হবে বলে দাবি করছেন শান্তনুবাবু।