পশ্চিম মেদিনীপুর সুমন পাত্র: জঙ্গলমহল জুড়ে আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য ঝাড়গ্রাম আসানসোল হাইওয়ে দাবী জঙ্গলমহল বাসীর। ব্রিটিশ ভারতে গর্জে উঠেছিল জঙ্গলমহল সাঁওতাল বিদ্রোহ থেকে চুয়াড় বিদ্রোহের সাক্ষী বহনকারী এই পুরুলিয়া বাঁকুড়া ও মেদিনীপুরের লাল মাটি বঞ্চিত থেকেছে বরাবর। কখনো বাম শাসনের চোখ রাঙ্গানি। কখনো এরা দেখেছে মাওবাদী শাসন। বঞ্চিত এই জঙ্গলমহল কখনো কাছে টেনে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে কখনো দুহাত উজাড় করে দিয়েছে বিজেপি সিপিএমকে দুমুঠো উন্নয়নের আশায়। উন্নয়ন মেলেনী। পেয়েছে গাল ভরা প্রতিশ্রুতি আর বঞ্চনা। এবার জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল থেকে ঝাড়্গ্রাম লালগড় হয়ে আসানসোল দুর্গাপুর পর্যন্ত সরাসরি হাইওয়ে তৈরির দাবি তুলল জঙ্গলমহলবাসী।

তাদের দাবি এই রাস্তাটি তৈরি হলে উপকৃত হবে জঙ্গলমহলের দুকোটি মানুষ। এই রাস্তাটি সংযুক্ত করবে জাতীয় সড়ক দুই ও জাতীয় সড়ক ছয়ের মধ্যে সেই সাথে এ রাস্তাটি দিল্লি কলকাতা গ্রীনফিল্ড এক্সপ্রেসওয়েকে আড়াআড়িভাবে ক্রস করবে। এই রাস্তাটি বিকল্প হয়ে উঠবে চেন্নাই থেকে দিল্লি যাওয়ার কিংবা দক্ষিণ ভারত থেকে উত্তরবঙ্গে যাওয়ার জন্যেও। যানজট কমাবে বাকি খড়গপুর মোরগ্রাম জাতীয় সড়কের উপরেও। সেই সাথে প্রস্তাবিত এই রাস্তাটি সংযুক্ত করবে বেলদা, কেশিয়াড়ি, কুলটিকরী, লোধাসুলি, ঝাড়গ্রাম, কাঁটাপাহাড়ি বুলানপুর, পাথরপাড়া, দুবরাজপুর, পাঁচমুড়া, ওন্দা, বেলিয়াতোড়, মালিয়াড়া, অন্ডাল, রানীগঞ্জ ও আসানসোলকে। প্রস্তাবিত এ রাস্তাটিতে জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত ধু ধু জঙ্গল থেকে শুরু করে এ রাস্তাটি সংযুক্ত করবে আসানসোল দুর্গাপুরের মতো শিল্পাঞ্চলকেও। এই রাস্তাটি আগামী দিনে জঙ্গলমহলকে পথ দেখাবে নতুন শিল্পের। এই রাস্তা দিয়ে কখনও কংসাবতী কখনও শিলাবতী কখনও সুবর্ণরেখা আবার কখনও দামোদর নদীর জল শিল্পোদ্যোক্তাদের কাজে আসবে আবার কখনো কাজে আসবে জঙ্গলমহলের কাঁচামাল। একদিকে যেমন ঝাড়গ্রাম লোকসভা অপর দিকে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বিষ্ণুপুর, আসানসোল, লোকসভার পাশাপাশি বোলপুর বীরভূমের জন্যেও এ রাস্তাটি তৈরি হলে যে আগামী দিনে তারা প্রভূত উপকৃত হবে সে কথাটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই এই রাস্তাটির দাবি নিয়ে আগামী দিনে কেন্দ্রীয় ভারী সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গড়গড়ির দ্বারস্থ হতে চলেছেন জঙ্গলমহলবাসীদের একাংশ। জঙ্গলমহলে লক্ষাধিক মানুষ দুগ্ধ শিল্পের সাথে যুক্ত। কে কেউ যুক্ত কাঁচা সবজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন উৎপাদন মূলক কাজের সাথে তারা দ্রুত এইসব কাঁচামাল আসানসোলের মত শিল্প শহরে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তারা দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার স্বপ্ন দেখে কিন্তু এখন এই মুহূর্তে গ্রামের প্রত্যন্ত কয়েকটি প্রান্ত থেকে দিল্লি পৌঁছতে তিন দিন সময় লাগে। এই রাস্তাটি তৈরি হলে তা কমে অর্ধেক হয়ে যাবে। দূরত্ব কমবে ৩০০ কিলোমিটার। অপরদিকে আসানসোলের মত অনেক শিল্পোন্নত শহর অনুসারী শিল্প তৈরি থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল খুব সহজেই জঙ্গলমহল থেকে সংগ্রহ করতে পারবে। সমস্যা মিটবে জঙ্গলমহলের হাজার হাজার বেকারের। কবে আসবে জঙ্গলমহলের দারিদ্রতা উন্নত হবে আর্থসামাজিকভাবে জঙ্গলমহল। বৈষম্য কমবে গ্রাম ও শহরের দূরত্ব ঘুচবে ভারতের সাথে ইন্ডিয়ার। এখন সেই আশায় মশগুল জঙ্গলমহলবাসীদের একাংশ। প্রস্তাবিত এই পথটি ঘিরে স্বপ্ন দেখছে মেদিনীপুরের পাথরপাড়া, স্বপ্নে মশগুল ঝাড়গ্রামের রামগড় কিংবা বাঁকুড়ার পাঁচমুড়া। তাদের স্বপ্ন কতটা ফলপ্রসূ হয় সেদিকেই তাকিয়ে গোটা জঙ্গলমহল।