Skip to content

"একুশ" -- সুমন বিশ্বাস

1 min read

একুশ শতক, বিশের দশক, একুশে ফেব্রুয়ারি।
রক্তের দাগ আজও অমলিন, ভুলতে কি আর পারি?
ভাষা কেড়ে নেবে? দেশ কেড়ে নেবে? কেড়ে নেবে ভিটেমাটি?
বাঙালী মানেই জাত বিপ্লবী, কী কলম - কী লাঠি।
৫২তে বরকতেরা ভাষার জন্যে খুন।
সেদিন থেকেই বঙ্গদেশ বিপ্লবে নবারুণ।
গঙ্গা, যমুনা, পদ্মা বক্ষে বয়ে গেছে ইতিহাস।
ফেব্রুয়ারি মানেই আবেগ আর বিপ্লবের মাস।
আমার ভাষা - তোমার ভাষা, বাংলা ভাষা - বাংলা ভাষা।
এই ভাষাতেই গাইছে বাউল, মাঝিমাল্লা , জেলে, চাষা।
এই ভাষাতেই মাকে ডাকি, দুঃখে কাঁদি, সুখে হাসি।
এই ভাষাতেই বসন্তে আজ প্রেয়সীকে ভালবাসি।
এই ভাষাতেই রাগলে গালি, ভয় পেলেই চিৎকার।
ক্ষোভ বিক্ষোভ উগরে দিই, এই ভাষাতেই ধিক্কার ।
ইংরাজি হরফ দিয়েও এই ভাষাতেই মেসেজ করি।
সরস্বতী পুজোর দিনে এই ভাষাতেই হাতে খড়ি।
এই ভাষাতেই শৈশবের সেই বর্ণপরিচয়
আদর্শলিপির পাতায় ছিল অজগরের ভয়।
রূপকথার রঙ্গীন জগৎ আর পক্ষীরাজের ঘোড়া।
এই ভাষাতেই রবি ঠাকুর, নামটা যে তাঁর জগৎ জোড়া।
সুকুমারের "আবোল তাবোল"; জসীমউদ্দীন নকসী কাঁথায়।
কিশোর বেলা রাঙিয়ে তোলে, সাদা কালো বইয়ের পাতায়।
বাঙালির বয়সসন্ধি কাটে উষ্ণ প্রেমের গল্প পাঠে।
রাত কেটে যায় বইয়ের পাতায়, রাতের শেষে সূর্যি ওঠে।
এই ভাষাতেই কবিতা লিখি, ফেসবুকের দেওয়াল জুড়ে।
মন খারাপেও গেয়ে ওঠে মন, রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুরে।
এই ভাষাতেই আদর করি প্রেয়সীকে গভীর রাতে।
বাংলা ছবির আটের দশক, প্রেম থেমে যায় একলা ছাদে।
এই ভাষাতেই পেরিয়েছিলাম চাঁদের পাহাড় কিশোর কালে।
প্রথম প্রেমের পত্র লেখা এই ভাষাতেই সেই বিকালে।
এই ভাষাতেই ঝগড়া করি, তর্ক করি চায়ের কাপে।
ঘন্টা খানেক সঙ্গে সুমন বিজ্ঞাপনের দুর্বিপাকে।
এই ভাষাতেই টিভি সিরিয়াল সর্বগ্রাসী-সর্বনাশী।
এই ভাষাতেই শাশুড়ি বউয়ের কুটকচালি ভালবাসি।
ইংলিশ মিডিয়ামের আবার বাংলাটা ঠিক আসে না।
বাংলা সাহিত্য বড্ড নিরস তাই এরা ভালবাসেনা।
এদের কাছে কিসের একুশ? খায় না গায়ে মাখে?
জেন-এক্স এখন কেবল সোস্যাল মিডিয়া নিয়েই থাকে।

Latest