নিজস্ব সংবাদদাতা : আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে আজ সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ জানালেন প্রতিবাদী চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের আইনজীবী শীর্ষ আদালতে বলেন, 'হাসপাতালে এখনও ভয়ের পরিবেশ রয়েছে।' এই আবহে প্রধান বিচারপতি হুমকি জানতে চান, কারা হুমকি দিচ্ছেন। এই আবহে আজ চিকিৎসকদের অভয় প্রদান করেন প্রধান বিচারপতি। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে। সেখানেই রাজ্যের দেওয়া ঘটনা পরম্পরা নিয়ে প্রথম প্রশ্ন তোলেন সিবিআই-এর তরফে সলিসিটার জেনারেল মেহতা। ঘটনার পাঁচ দিন পরে তদন্ত করতে নেমেছে সিবিআই এবং এই সময়কালে অনেক কিছু বদলে গিয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। যদিও তাঁর বক্তব্যের বিরোধিতা করেন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল। ঘটনার ঘটনা পরম্পরা ও ভিডিওগ্রাফি রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। কিন্তু ঘটনা পরম্পরা নিয়ে বিচারপতিদের একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য।
খটকার উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “একটা জিনিস নিয়ে খটকা লাগছে। সকাল ১০:১০ মিনিট নাগাদ টালা থানা জেনারেল ডায়েরি করল। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘটনাস্থল সিল করল পুলিশ? তত ক্ষণ সেখানে কী হচ্ছিল?” বিচারপতি পারদিওয়ালার প্রশ্নের জবাবে রাজ্য জানায়, ৯ অগস্ট সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটের মধ্যে ময়নাতদন্ত হয়েছিল। এরপরেই বিচারপতি পারদিওয়ালা প্রশ্ন করেন, ময়নাতদন্তের পরেও রাত ১১:৩০ অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের হল কীভাবে? তদন্তে অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ সুপারের ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। প্রধান বিচারপতিও মামলা দায়ের করার সময় নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। রাজ্য জানায়, জেনারেল ডায়েরিতে দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা লেখা হয়েছিল।
এরপরেই কড়া মন্তব্য করেন বিচারপতি পারদিওয়ালা, “আমি আমার ৩০ বছরের আইনের কেরিয়ারে এমন ভাবে তদন্ত হতে দেখিনি। আপনি যদি ময়নাতদন্তের আগে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করেন, তবে কিসের ভিত্তিতে করলেন? যদি ময়নাতদন্তের পরে অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা করে থাকেন, তবে তখন অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা কেন দায়ের করলেন? তখন তো মৃত্যুর কারণ জেনেই গিয়েছেন!” সন্দেহ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতিও। সকাল সাড়ে ৯টায় মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হওয়ার প্রায় ১৪ ঘণ্টা পরে রাত ১১:৩০ নাগাদ এফআইআর দায়ের হল কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি। সেই সঙ্গে অধ্যক্ষ কেন এফআইআর দায়ের করতে এলেন না, কেন তিনি পদত্যাগের পরেই অন্য মেডিকেল কলেজে তড়িঘড়ি বদলি করা হল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত।