Skip to content

ঢাকায় হরিজনদের উচ্ছেদপ্রক্রিয়ায় ৩০ দিনের স্থিতাবস্থার আদেশ হাইকোর্টের!

ঢাকা জাকির হোসেন : বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা না করে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বংশালের আগা সাদেক রোডে হরিজন সম্প্রদায়ের বসতি উচ্ছেদ না করতে নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের হাইকোর্ট।

হরিজন কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ ১৩ জুন বৃহস্পতিবার রুলসহ ১ মাসের স্ট্যাটাসকোর (যেমন আছে তেমন থাকার) আদেশ দেন। রুলে বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা না করে হরিজনদের উচ্ছেদ কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতে হরিজনদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রিটকারী তিন আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা, মনজ কান্তি ভৌমিক ও আইনজীবী উৎপল বিশ্বাস।

ব্রিটিশ আমলে ভারতের তেলেগু এলাকা থেকে আসা এই হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন কয়েক’শ বছর ধরে এই কলোনিতে বসবাস করে আসছেন। মিরনজিল্লার সুইপার কলোনিতে বর্তমানে প্রায় পাঁচ'শর মতো পরিবার বাস করেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, এখানে বসবাস করা পাঁচ শতাধিক পরিবারের মধ্যে ৬৬ জনকে পুনর্বাসন করা হবে। কারণ এই ৬৬ জন বর্তমানে করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কাজে নিয়োজিত। বাদ বাকি পরিবারগুলা উচ্ছেদ করে জমিতে বহুতল ভবন বাণিজ্যিক ও কাঁচাবাজার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যদিও এখানে বসবাস করা পরিবারের সদস্যরা কোনো না কোনো সময় সিটি করপোরেশনের কর্মী ছিল। তাদের অনেকেই ছাঁটাই হয়েছেন। কারও মৃত্যু হয়েছে। তা ছাড়া এখানে বসবাস করা সবার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা একমাত্র এ কলোনি।

সেখানে থাকা স্থাপনা উচ্ছেদে গত সোমবার গিয়েছিলেন সংস্থাটির কর্তারা। তারা হরিজন সম্প্রদায়ের তীব্র আপত্তি ও বাধার মুখে পড়েন। পরে তারা একটি দেয়াল ও কয়েকটি স্থাপনা ভেঙে চলে যান। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ করছে হরিজন সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা। তারা স্কুলের পোশাক পরে বিক্ষোভে অংশ নেন।

উচ্ছেদ হলে কোথায় যাবেন এমন চিন্তা থেকে গাছে ঝুলে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে একজন। এতোকিছুর পরও কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের কোনো পরিবর্তন হয়নি, গোঁ ধরেই আছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)৷ কলোনি ছেড়ে যেতে নতুন করে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছে ডিএসসিসি। এ ছাড়া ৪০০ বছরের পুরোনো এই কলোনিতে কেটে দেওয়া হয়েছে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের লাইন। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন প্রায় চার হাজার মানুষ। মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

গত ৯ জুন রোববার কলোনি খালি করে দিতে ১২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয় ডিএনসিসির পক্ষ থেকে। ১০ জুন সোমবার অভিযান চালায় তারা৷ ১১ জুন মঙ্গলবার দিনভর হাজারো মানুষের প্রতিবাদের মুখে প্রস্তুতি নিয়েও অভিযান পরিচালনা করতে পারেনি ডিএনসিসি। সর্বশেষ জায়গা ছাড়তে সময় দেওয়া হয়েছে ৪৮ ঘণ্টা। এই হিসেবে ১৪ জুন শুক্রবার রাত অথবা ১৫ জুন শনিবার আবারও কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযান হতে পারে। এরই মধ্যে হাইকোর্ট উচ্ছেদ কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন।

Latest