Skip to content

"সম্পাদকীয় - বাঙালির নববর্ষ একটি অন্যতম উৎসব"

পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ  উদযাপন বাঙালির এক অন্যতম উৎসব। ধর্ম-সম্প্রদায় নির্বিশেষে বাংলা ভূখন্ডের সব মানুষের প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। বৈশাখকে বরণ করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন,

"এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ।
তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক॥
যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে-যাওয়া গীতি,
অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক॥
মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,
অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।"


অতীতের গ্লানি-দুঃখ-জরা মুছে ফেলে নতুন বছর সবার জন্য আনন্দ ও মঙ্গলের বার্তা নিয়ে আসবে—এটাই প্রত্যাশিত। ধর্মীয় অনুষঙ্গহীন এরকম সর্বজনীন জাতীয় উৎসব পৃথিবীতে বিরল। বাংলা নববর্ষের সর্ব জনীনতার কারণে অনিন্দ্য সুন্দর বৈশিষ্ট্যমন্ডিত উৎসব। পৃথিবীতে প্রচলিত অধিকাংশ বর্ষপঞ্জির উৎপত্তি কোনো না কোনো ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত, কিন্তু বাংলা নববর্ষের সঙ্গে ধর্মীয় অনুষঙ্গ নেই। মূলত কৃষিকাজ ও খাজনা সংগ্রহের ব্যবস্থাকে ঘিরে এর প্রচলন, পরে এর সঙ্গে যুক্ত হয় ব্যবসা-বাণিজ্যের দেনা-পাওনার হিসাব মেটানো। দিনে-দিনে পহেলা বৈশাখ হয়ে ওঠে এক সর্বজনীন সাংস্কৃতিক আনন্দ-উৎসব।আমরা স্মরণ করতে পারি, সম্রাট আকবরের সময় খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য বাংলা নববর্ষ চালু হয়। এর পর থেকে নববর্ষকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা সারা বছরের হিসাব-নিকাশ করে থাকেন, হালখাতা খোলেন। ক্রেতারা বকেয়া শোধ করেন। শত শত বছর ধরে এ ধারা চলে আসছে। আশার কথা, বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে বৈশাখী অর্থনীতি বেশ চাঙা হয়ে উঠেছে। কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, আমাদের চিন্তাচেতনা, মনন ও প্রাত্যহিক জীবনেও বাংলা নববর্ষ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠুক। স্বাগত ১৪৩১।

Latest