ঢাকা, জাকির হোসেন: বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতা নজরুল ইসলাম খান রাজন বলেছেন, "কোনো জনপ্রতিনিধি যদি জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে, তাদের কল্পনাতীত উন্নয়ন সাধনের জন্য আত্মনিয়োগ করে, চিন্তা, বুদ্ধি, আত্মপ্রকাশের সার্বিক স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করে, তবে সেই জনপ্রতিনিধির ভালোবাসায় জনগণ আকুল হয়ে ওঠে, তাঁকে বাঁচাতে নিজেদের জীবন পর্যন্ত বাজি রাখতে পিছপা হয় না৷ কোনো জনপ্রতিনিধি যদি বিগড়ে না যায়, আমৃত্যু তাঁকেই পাশে চায় জনগণ৷" গত ২৪ আগস্ট শনিবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাজুড়ে বরিশাল থেকে আসা নেতাকর্মীরা স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে বিশাল আনন্দ মিছিল শেষ করে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে জমায়েত হলে তাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির এই প্রাক্তন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক৷ বক্তব্যের শুরুতেই বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া সংরক্ষণ আন্দোলন ও এর পথ ধরে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে স্মরণ করেন তিনি৷ স্মরণ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি বীর উত্তম জিয়াউর রহমানকে৷ এসময় রাজন আশা ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশের প্রাক্তন ও প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে আবার পুরোদস্তুর রাজনীতিকে ফিরে আসবেন৷ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "বাংলাদেশের ক্রান্তিলগ্নে সবসময় তিনি (তারেক রহমান) বিভোর ছিলেন দেশ ও মানুষের চিন্তায়৷ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে গড়ে ওঠা তারেক রহমান বাংলাদেশের একদম তৃণমূলের মানুষের কাছে যেয়ে যেয়ে তাদের কষ্ট ভাগ করে নিতেন৷ স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটাতে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে দেশনায়ক তারেক রহমান যে ভূমিকা পালন করেছেন, তা বাংলাদেশ ও এদেশের আঠারো কোটি মানুষকে আজ এক নতুন ভোরের আলোয় আলোকিত করেছে৷ ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের পথ ধরে আমরা আজ স্বাধীন বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আছি৷" তিনি আরও বলেন, "যে তারুণ্যের হাত ধরে শহীদ জিয়াউর রহমান দেশকে বদলে দেওয়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন, তাঁর সেই কাজগুলোকে পূর্ণতা দিতেই তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমান বাংলাদেশে ফিরে বাংলার মানুষের হাল ধরবেন৷ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি, অর্থনীতি সহ সবক্ষেত্রে প্রভূত উন্নয়ন সাধনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিটি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ সবারই আজ একটাই আশা, দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে স্বনির্ভর সোনার বাংলা গড়ে তোলা৷ আমরা সবাই এক হলে আমাদের দমানোর শক্তি আর কারো নেই৷ এই ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নৃশংস স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে বাংলার মানুষ সেটাই প্রমাণ করেছে৷"
প্রসঙ্গত, নজরুল ইসলাম খান রাজন পেশায় আইনজীবী৷ বরিশালে জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাজন ছাত্রজীবন থেকেই বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী আদর্শের একজন কর্মী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন৷ ছাত্রজীবনে বিএনপির অঙ্গসংগঠন ও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি ছাত্র অধিকার রক্ষায় স্বোচ্চার ভূমিকা রেখেছেন৷ তখন বরিশালের শিক্ষাঙ্গনগুলোতে যখন যেখানে শিক্ষার্থীরা নানাবিধ সমস্যায় পড়তো, সেখানেই হাজির হয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য সকল ব্যবস্থা নেওয়া ও প্রতিবাদের রেওয়াজ ছিল তাঁর৷ এজন্য শিক্ষার্থীদের মাঝে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য ছাত্রনেতা হয়ে ওঠেন৷ পরে সাংগঠনিক দক্ষতায় তিনি বিএনপির যুবসংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের বরিশাল জেলার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান৷ এর পথ ধরে বরিশাল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নজরুল ইসলাম রাজন৷ তিনি বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতিরও প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক৷ স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ হিসেবে রাজনের সুনাম রয়েছে৷ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে তিনি বেশ জনপ্রিয়৷ মিছিলে অংশ নেওয়া বরিশালের বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলাম জানালেন, "বিরোধীদের আগ্রাসনের শিকার হয়ে মিথ্যা মামলায় বহুবার জেল খাটতে দেখেছি রাজন ভাইকে, হামলার শিকার হইসেন৷ এত হামলা মামলার মধ্যেও সংগঠনের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা থেকে কখনও বিচ্যুত হোন নাই৷ যখন দেশের বাইরে ছিলেন সবসময় ফোন দিয়ে খোঁজ নিসেন৷ সংগ্রাম করে গেছেন, করছেন৷ নিজ দলের প্রতি এই ত্যাগ রাজন ভাইকে তারেক জিয়ার (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান) আস্থাভাজন করেছে৷" বরিশাল তথা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের রাজনীতিতে সাধারণ মানুষের কাছে নজরুল ইসলাম খান রাজনের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে৷