গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে চলছে SIR; আর এই কাজের গুরু দায়িত্ব পরেছে BLO দের কাঁধে। নির্বাচন কমিশনের এই কাজের সাথেই চলছে ডেটা এন্ট্রি, ডিজিটাইজেশনের কাজ। প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসআইআর ফর্ম বিলি করা এবং পরে তা সংগ্রহ করে ডেটা এন্ট্রি করা সব-ই করতে হচ্ছে BLO দের; এই সমস্ত কাজ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন BLO-রা। এরই মধ্যে কাউকে কাউকে স্কুলেও যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিএলও-রা। এ নিয়ে বিক্ষোভও BLO-রা দেখাচ্ছেন বিভিন্ন জায়গায়। কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে গিয়ে কেউ কেউ কেঁদেও ফেলেন।
BLO-রা বৃহস্পতিবার কাটোয়া ১ নম্বর বিডিও অফিসে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ শিবিরে গিয়েছিলেন, সেখানে তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এত কম সময়ের মধ্যে সমস্ত ভোটারের তথ্য অ্যাপে আপলোড করা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে জানান BLO-রা ।
এই প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত ছিলেন কাটোয়ার মহকুমাশাসক অনির্বাণ বসু এবং নির্বাচন কমিশনের একাধিক প্রতিনিধি। কিন্তু বৈঠকের শুরুতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিএলও-রা। কাটোয়ার ৭৯ নম্বর বুথের BLO দেবাশিস দাস বলেন, “আমার বুথে ১০৯৩ জন ভোটার আছেন। তাদের ফর্ম বিলি ও সংগ্রহ দুটোই করছি। কিন্তু এর মধ্যে যদি আবার ডিজিটাইজেশনের-ও কাজ করতে হয়, তবে একার পক্ষে করা অসম্ভব। আমার শারীরিক অবস্থাও ভাল নয়। এ ভাবে চাপ দিলে হয়তো আমাকে আত্মহত্যা করতে হবে।”

একই কথা বলেন গোয়াই গ্রামের ৩ নম্বর বুথের BLO পঙ্কজ কোনার ও জাজিগ্রামের ৯ নম্বর বুথের BLO অমিত দাস। তাঁরা অভিযোগ করেন, অধিকাংশ BLO-ই অনলাইন বা কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষ নন। তার সাথেই অনেক এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবাও উপলব্ধ নই। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভোটারদের বিপুল তথ্য অ্যাপে আপলোড করা দুঃসাধ্য। তাঁদের দাবি, প্রতিটি BLO-র সঙ্গে একজন করে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ করুক নির্বাচন কমিশন ।
মহকুমাশাসক অনির্বাণ বসু এই বিষয়ে আলোকপাত করে বলেন, ‘‘BLO-রা তাঁদের অসুবিধার কথা জানিয়েছেন। আমরা তা শুনেছি। তবে নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট নির্দেশও তাঁদের জানানো হয়েছে। কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার প্রমাণ-সহ আবেদন করলে, তা মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হবে এবং স্বাস্থ্য বিভাগ যাচাই করে দেখবে, নির্বাচনী দায়িত্বে সমস্যা হবে কি না।”
এই দিন মেদিনীপুর সদর ব্লকে BDO অফিসেও ক্ষোভে ফেটে পড়েন BLO-রা। বৃহস্পতিবার দুপুরে মেদিনীপুর শহর ও সদর ব্লকের BLO-রা একাধিক দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি জমা দেন BDO কাহেকাশান পারভিনের কাছে।