পূর্ব মেদিনীপুর নিজস্ব সংবাদদাতা : তমলুকের বহিচাড় বিপিন শিক্ষা নিকেতনের ভূগোল বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ড. মৌসম মজুমদার শিক্ষারত্ন সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন। অখণ্ড মেদিনীপুরের পূর্ব মেদিনীপুর এই সুসন্তান বুধবার ২৭ নভেম্বর সকাল ৮টা ৫৪ মিনিটে, মাত্র ৪৮ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তমলুকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তিনি বিএসসি এবং এমএসসিতে গোল্ড মেডালিষ্ট। তমলুক থানার আস্তাড়া গ্রামে মৌসমবাবুর বাড়ি। বিশ্বভারতী থেকে পিএইচডি করেছেন। এছাড়াও ডিজিটাল ম্যাপিং, কম্পিউটার এবং রবীন্দ্রসংগীতের উপর ডিপ্লোমা করছেন তিনি। ২০০০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পশ্চিমাঞ্চল রিজিয়নে ভূগোলে প্রথম স্থানাধিকারী। প্রায় ৬০ টির কাছাকাছি তাঁর লেখা বই এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে। ছাত্রদের পড়ানোর পাশাপাশি তিনি পরিবেশ ও সমাজ শিক্ষার পাঠ দেন। সারা জেলায় তাঁর গুণগ্রাহী ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা প্রচুর। অজাত শত্রু এই শিক্ষক একাধিক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থেকে ধারাবাহিকভাবে সমাজসেবা করে চলেছেন। শিক্ষকতা, সমাজসেবার পাশাপাশি একজন সফল সংগ্রাহক। তিনি এই রাজ্যের একজন অন্যতম সংগ্রাহক। তাঁর হেফাজতে রয়েছে ৫৫০ জন সেলিব্রেটি মানুষের অটোগ্রাফ। রয়েছে ১৩১ টি দেশের মুদ্রা, ১০০ টি দেশের ২৫০০ ডাকটিকিট, ৫০ টির বেশি বিভিন্ন ধরনের হাতির দাঁতের জিনিস, ৩৭ ধরনের শাঁখ, ৩০০ ধরনের পাথর এবং ভারতের সব উপকূলীয় এলাকার বালি। অসংখ্য পুরাতাত্ত্বিক জিনিসপত্রের পাশাপাশি সামুদ্রিক জীবাশ্ম সংগ্রহ করা নেশা। বাড়িতে গড়ে তুলেছেন ছোটখাটো একটি মিউজিয়াম। ২০১১ তে জনপ্রিয় টিভি শো "দাদাগিরি"তে রানার্স হয়েছিলেন কুইজকে আশ্রয় করেই। নিজেই সম্পাদনা করেছেন "কুইজ ডট কম" পত্রিকা। অবিভক্ত মেদিনীপুরের অন্যতম সমাজসেবী সংস্থা "মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি"র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তিনিই। পূর্ব জেলা তথা রাজ্যজুড়ে ক্যুইজকে সর্বগ্রাহী করে তোলার ক্ষেত্রে উল্লেখ্য ভূমিকা পালন করেছেন ড. মৌসম মজুমদার। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্যুইজ জগতের এক পরিচিত মুখ তিনি। ২০০০ সালের নভেম্বর মাসে ভূগোল বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে তমলুকের বহিচাড় স্কুলে যোগ দেন।একাধারে শিক্ষক, লেখক, গবেষক, প্রতিবেদক, কুইজ মাস্টার, পরিবেশবিদ, সমাজকর্মী এবং মোটিভেশনাল স্পিকার মৌসম মজুমদার ২০২২ সালে রাজ্য সরকারের 'শিক্ষারত্ন' পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন। মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র সোস্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির এই প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক।মৌসম মজুমদার আমাদের অন্তর প্রিয় মানুষ ছিলেন। মৌন হয়ে কয়েক হাজার মানুষ হেঁটে হেঁটে চললেন তার শেষ যাত্রার ।