নিজস্ব সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অযোধ্যাতে যখন রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা করছেন এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কলকাতায় সর্বধর্ম সমন্বয়ের জন্য সম্প্রীতির মিছিল করছেন ঠিক সেই ২২সে জানুয়ারীর সকালেই অখিলভারত হিন্দুমহাসভা, যারা রামমন্দির আন্দোলনের মূল Petitioner এবং Verdict Holder তারা রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে কলকাতা থেকে প্রায় সাড়েতিনশো কিলোমিটার দূরে প্রায় এক হাজার মানুষ নিয়ে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে সীতাকুণ্ডের পাশে সীতারাম মন্দির স্থাপনের জন্য সংকল্প পূজা করলো । শুধু সীতারাম মন্দির স্থাপন করা নয় এই অযোধ্যা পাহাড় অঞ্চলকে হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করে তার যথোপযুক্ত উন্নয়ন ঘটিয়ে একটি উন্নত মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার পক্ষেও দাবী জানালো হিন্দুমহাসভা । আগামী দিনে এই বিষয়ে জনমত গঠন করে তারা পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড় অঞ্চলের এমপি, এমএলএ, রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী এবং অবশ্যই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । অখিলভারত হিন্দুমহাসভার রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য অযোধ্যা যেমন প্রভু রামচন্দ্রের জন্মস্থান সেই রকম বাংলার এই অযোধ্যাপাহাড় অঞ্চল প্রভু রামের কর্মভূমিরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ । এই পথ দিয়েই ভাই লক্ষণ এবং পত্নী সীতা দেবীকে নিয়ে প্রভুরাম অযোধ্যা থেকে কিস্কিন্ধ্যা গিয়ে ছিলেন এবং বেশ কিছু দিন এই অঞ্চলের অরণ্যে বসবাস করেন । শুধু তাই নয় তৃষ্ণার্ত সীতা দেবীকে জল খেতে দেওয়ার জন্য তীর নিক্ষেপ করে এই অঞ্চলে যে জলাশয় বা কূপ সৃষ্টি করেন ভগবান রামচন্দ্র সেই জলাশয়ই সীতাকুন্ড নামে পরিচিত । চন্দ্রচূড় বাবু আরো বলেন প্রভু রামচন্দ্র কোনো এক ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলের মালিকানা হতেই পারেননা, ভারতবর্ষের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে মর্য্যাদা পুরুষোত্তম রামচন্দ্রের অবস্থান হওয়া উচিৎ । সনাতনী সমস্ত মানুষের আবেগের নাম রামচন্দ্র । তাই ভোট ব্যাংকের স্বার্থে রাজনৈতিক রুটি স্যাঁকার জন্য যারা প্রভু রামকে হিন্দি বলয়ের ভগবান করে রাখতে চান তাদের জানা দরকার রাবণকে যুদ্ধে হারানোর জন্য প্রভু রাম এই বাংলার ঘরের মেয়ে উমা বা দেবী দুর্গার আরাধনা করে ছিলেন ।
রামের সৃষ্ট পুজাই আজ অকালবোধন রূপে শরৎকালে সারা বাংলায় দেবী দুর্গার পূজা হয় । সারা পৃথিবীর মানুষের এই ইতিহাস জানতে গেলে বাংলার অযোধ্যা পাহাড় অঞ্চলে আসা উচিৎ । ভক্তি, প্রেম এবং পারস্পরিক সৌভাতৃত্বের মাধ্যমেই কেবলমাত্র ভারতে প্রকৃত রামরাজ্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব । হিন্দুমহাসভার প্রায় হাজারের বেশি কর্মী সমর্থক চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে অযোধ্যা পাহাড়ের হিলটপ অঞ্চলে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার শোভাযাত্রা করে। তারপর তারা অযোধ্যা পাহাড় স্থিত রামমন্দিরের সামনে একটি ধর্মীয় পথসভা করে । তারপর তারা সীতা কুণ্ডের পবিত্র জল নিয়ে রামসীতা মন্দির স্থাপন এবং অযোধ্যা পাহাড় অঞ্চলকে হেরিটেজ সাইট করার জন্য জনন্দলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে সংকল্প করলো। রামমন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা এবং সমন্বয় যাত্রা নিয়ে সারা দেশ যখন উত্তাল তখন সম্পূর্ণ অনন্য একটি পথে হেঁটে ভারতের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল হিন্দু মহাসভা যে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ।