Skip to content

ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনির জামডহরি গ্রামে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্য শিবিরের কর্মসূচি!

1 min read

নিজস্ব সংবাদদাতা : ঝাড়গ্রামের জামবনি ব্লকের ধড়সা গ্রাম পঞ্চায়েতের জামডহরি গ্রামে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সূচনা হলো নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ শিবির। এই শিবির আয়োজন করেছে ঝাড়গ্রামে শহরের পূর্বাশা ক্লাব ।সহযোগিতা করেছে পরিবেশ গবেষণা সংস্থা ট্রপিক্যাল ইনস্টিটিউট অফ আর্থ এন্ড এনভারমেন্টাল রিসার্চ (TIEER) ,ব্যবস্থাপনায় ছিল জামডহরি গ্রামবাসী। আজকে এই শিবিরে জামডহরি গ্রামবাসী তথা নিকটবর্তী পাঁচটি গ্রাম তথা পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ডের দুটি গ্রামের গ্রামবাসী বৃন্দ এই শিবিরে অংশ নেয়। মূলত ঝাড়গ্রাম শহরের বিশিষ্ট ১০ জন চিকিৎসক এই শিবিরে সেবা দান করেন।মেডিসিন সাধারণ চিকিৎসক, দন্ত্য বিষয়ক চিকিৎসক, স্ত্রী ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ, সার্জারি , শিশু বিশেষজ্ঞ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ এবং অন্যান্য মেডিসিন তথা এনেসথেসিয়াস বিশেষজ্ঞ উপস্থিত ছিলেন।

সেই সঙ্গে প্রায় ছয় জন টেকনিশিয়ান যারা সুগার ,চোখের পাওয়ার এবং অন্যান্য বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। শুধু স্বাস্থ্য পরীক্ষা নয়, স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান। মুনিয়াদা ,ডুমুরিয়া , কানিমৌলি,জগন্নাথপুর এবং অন্যান্য গ্রামের অধিবাসীরা শিবিরের অংশ নেয় এবং চিকিৎসা করান। পূর্বাশা ক্লাবের কার্যকরী সভাপতি তথা টিয়ার গবেষণা সংস্থার সম্পাদক অধ্যাপক প্রণব সাহু জানান , রাষ্ট্রপুঞ্জের স্থিতিশীল উন্নয়নের ২০৩০ এর যে কর্মসূচি সেই কর্মসূচির ১৭ টি যে লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য রয়েছে তার তিন নম্বর যে লক্ষ্য তা হলো গুড হেলথ এবং ওয়েলবিং অর্থাৎ সুস্বাস্থ্য এবং সুস্থায়ী জীবন। সেই লক্ষ্য নিয়ে এই গ্রামটিকে তথা এলাকা বাসীদের সুস্বাস্থ্য গড়ে তোলার জন্য এই ধরনের সচেতনতা এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিরীক্ষা বন্দোবস্ত করা হয়। উল্লেখযোগ্যভাবে তিনি বলেন, গ্রামটি ২০২০ সাল কোভিড- 19 অতিমারি সময় কালীন দত্তক নেওয়া হয় পরিবেশ গবেষণা সংস্থা টিয়ারের পক্ষ থেকে। মূলত সুস্থায়ী গ্রামীণ উন্নয়ন এবং সুস্থায়ী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা, সেই লক্ষ্য নিয়ে দারিদ্রতা দূরীকরণ, জিরো হাঙ্কার অর্থাৎ শূন্য ক্ষুধার্ত এবং সম্পদের সম্পূর্ণ ব্যবহার ও কার্যকারিতা ইত্যাদি বিষয়ক চিন্তাভাবনা করা হয়।

গ্রামটিকে সম্পূর্ণভাবে স্বনির্ভর করার জন্য গ্রামীণ ট্যুরিজম বা গ্রামীণ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা হয় ২০২৪ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর ।এই গ্রামটি ধীরে ধীরে স্বনির্ভর হয়ে চলেছে । সেই সঙ্গে সুস্বাস্থ্য এবং সুস্থায়ী জীবনের জন্য এই শিবিরের বিশেষ আয়োজন এবং বাস্তবায়ন। চিকিৎসকের পক্ষ থেকে বিশিষ্ট চিকিৎসক প্রসুন ঘোষ জানান আমরা নিয়মিতভাবে এ অবৈতনিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির ও পর্যবেক্ষণ করে চলবো। একদিনের জন্য নয় এই শিবির সূচনা হলো তা নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ চলবে এবং আমরা সেবা দান করবো। অন্যদিকে অভিজ্ঞ এবং খ্যাতিসম্পন্ন চিকিৎসক সুদেষ্ণা ঘোষ বলেন গ্রামটি নির্মল ও বিশুদ্ধ বাতাসে ভরা । গ্রামটি যে অঞ্চলে অবস্থান করছে সেখানে এই ধরনের শিবির করতে পেরে খুবই আনন্দিত।

এই গ্রামটি অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা যেভাবে এগিয়ে চলেছে তেমনি সুস্বাস্থ্য ও সুস্থ জীবন যদি গড়ে ওঠে তাহলে গ্রামটি একটি আদর্শ গ্রাম হিসেবে পরিণত হবে। পূর্বাশা ক্লাবের সম্পাদক শিবাশীষ চট্টোপাধ্যায় তিনি জানান আমরা খুশি এবং আনন্দিত যে ঝাড়গ্রাম শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে একেবারে ঝাড়খন্ড সীমানায় এই ধরনের একটি বৃহৎ স্বাস্থ্য শিবির সম্পন্ন করা গেছে। এবং সেইসঙ্গে আগামী দিনও নিয়মিতভাবে গ্রামবাসীদের পাশে আমরা থাকবো। গ্রামের পক্ষ থেকে দিলীপ মান্ডি জানান আমাদের এই গ্রামটি পূর্বাশা ক্লাব তথা টিয়ার গবেষণা সংস্থা যেভাবে এগিয়ে এসেছেন সেই সঙ্গে ঝাড়গ্রামের সুনামধন্য চিকিৎসকরা আমাদের গ্রামে এসে চিকিৎসা প্রদান করলেন আমরা চিরকৃতজ্ঞ এবং বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। গ্রামের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে প্রায় কুড়ি জনের স্বেচ্ছাসেবী এই শিবিরের সেবা দান করেন ।তারা আনন্দের সঙ্গে এই সেবার কাজে যুক্ত হয় এবং তারা এই ডাক্তার বাবুদের কে আমন্ত্রণ জানান যাতে পুনরায় তারা এই ধরনের শিবিরের আয়োজন করতে পারে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বিমলেন্দু মাহাতো তিনি জানান যে এই ধরনের শিবির হওয়ার ফলে আমাদের গ্রামবাসী উপকৃত হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও আরো বেশি উপকৃত হবে। গ্রামের আহ্বায়ক স্বেচ্ছাসেবক ও শিল্পী সন্তু মাহাতো নিজেদের তৈরি জঙ্গল মহলের শিল্প কলা চিকিৎসকদের হাতে তুলে দেন। গ্রামবাসী শ্রাবণী মান্ডি তিনি জানান আমাদের এলাকাবাসীর মায়েদের এবং মেয়েদের সেভাবে ডাক্তার দেখানোর সুযোগ বা বন্দোবস্ত হয়ে ওঠেনি কিন্তু আজকে এই স্বাস্থ্য শিবিরের মাধ্যমে গ্রামের মায়েরা এবং মেয়েরা নিজেদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে পেরেছে তা আমরা সকলেই খুশি।প্রায় পাঁচশো মানুষ এদিনের শিবিরে অংশ নেন।

Latest