Skip to content

মর্মান্তিক করমণ্ডল এক্সপ্রেস ওড়িশার বাহানাগার দুর্ঘটনায়,চাকরির আশায় বসে খড়্গপুরের হীরার অসহায় মেয়ে ভবানী!

নিজস্ব সংবাদদাতা : এক বছর আগেকার মর্মান্তিক স্মৃতি , ওড়িশার বাহানাগার কাছে দুটি ট্রেনকে ধাক্কা দিয়ে উলটে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস।ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ২৩৮ জন। ৯০০-র বেশি যাত্রী আহত। রীতিমতো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে বালেশ্বর। চতুর্দিকে শুধুই স্বজনহারার কান্না।ওড়িশার বাহানাগার সেই দুর্ঘটনায় মৃতদেহের স্তূপ থেকে শনাক্ত হয়েছিল এ রাজ্যের ৯০ জনের দেহ। রেল দুর্ঘটনায় এ রাজ্যের মৃতদের পরিবারের এক জনকে স্পেশাল হোমগার্ডে চাকরির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছিল খড়্গপুরের হীরা নায়েকের প্রাণ। দুর্ঘটনার পরে কেটেছে এক বছর। 'রেল শহর' খড়াপুরের নায়েক পরিবার- কে শোকের সাথে সাথে আজ তাই গ্রাস করেছে হতাশার অন্ধকারও। প্রসঙ্গত, চিকিৎসার জন্য মা-কে নিয়ে কটকে গিয়েছিলেন খড়গপুর শহরের ২২নং ওয়ার্ডের আম্বেদকর কলোনীর বাসিন্দা, বছর ৫৫-র হীরা নায়েক। ১ জুন (২০২৩) রাতে ফেরার কথা ছিল হাওড়া মেলে, কিন্তু মা যশোদা দাস-কে নিয়ে উঠেছিলেন হাওড়া-যশবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেসে। সাধারণ কামরায় জায়গা না পেয়ে গার্ডকে বলে উঠে পড়েছিলেন গার্ডের কামরায়। ২ জুন সন্ধ্যা নাগাদ হঠাৎ একটা ঝাঁকুনি! তারপরই হাহাকার, আর্তনাদ। ভয়াবহ সেই ট্রেন দুর্ঘটনা।
গত বছর ৫ জুন দ্বিতীয় হুগলি সেতুর টোলপ্লাজ়ায় মৃতদের শ্রদ্ধা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘আমরা ঠিক করেছি মৃত পরিবারগুলিকে পাঁচ লক্ষ টাকা দেব। সঙ্গে একটা করে স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরি দেব।’’ পর দিনই খড়্গপুর মহকুমা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা গিয়ে হীরার বাড়িতে চাকরির জন্য নথি জমা দিতে বলেছিলেন। যদিও এ দিন বিষয়টি জেনে খড়্গপুরের মহকুমাশাসক পাতিল যোগেশ অশোকরাও বলেন, ‘‘ওই রেল দুর্ঘটনার অনেক পরে আমি এখানে দায়িত্বে এসেছে। আমার কাছে কেউ এই বিষয়ে সরাসরি এসে কিছু বলেননি। যদি এমন কোনও ঘটনা থাকে, তা হলে ৪ জুনের পরে আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে নিশ্চয় পদক্ষেপ করব।রবিবার ওই রেল দুর্ঘটনার এক বছর পূরণের দিনে হীরার পরিবারের খোঁজ নিতে তাঁর রেলবস্তির ঝুপড়ি বাড়িতে গিয়েছিলেন বামপন্থী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। হীরার মেয়ে ভবানী এখনও চাকরি না পাওয়ায় সরব হন তাঁরাও। সংগঠনের আহ্বায়ক অনিল দাস বলেন, ‘‘বারবার মহকুমাশাসকের কার্যালয় থেকে নবান্নে ছুটেও চাকরি হয়নি। আমরা জানি অনেকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো চাকরি পেয়েছেন। আমাদের আবেদন, রাজ্য সরকার যেন প্রতিশ্রুতি মেনে ভবানী নায়েককে চাকরি দেয়।’’ মৃত হীরার খড়্গপুরের ঝুপড়ি বাড়িতে রয়েছেন স্বামী নির্মাণ শ্রমিক শম্ভু নায়েক। সেই রোজগারেই মেয়ে ভবানী ও ছেলে ঈশ্বরকে নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। প্রতিদিন দু’বেলা খাবার জোটে না ভাল ভাবে। অভাব সত্ত্বেও চাকরিপ্রার্থী ভবানী ইতিহাসে অনার্স নিয়ে স্নাতকের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। অভাবে পড়া ছেড়ে গাড়ির গ্যারাজে কাজ করেন ছেলে ঈশ্বর। বাবা শম্ভু নায়েক বলেন, ‘‘আমি টুকটাক নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতাম। ছেলেটাও অভাবের তাড়নায় ১৫ বছর বয়সেই গাড়ির গ্যারাজে কাজে ঢুকেছিল। স্ত্রীর মৃত্যু আমাদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো।

Latest