আপনারা কি জানেন কোলকাতার বুকেই আজও দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ১০ ফুট উঁচু শিবলিঙ্গ বিশিষ্ট ৩০০ বছরেরও বেশী প্রাচীন এক আটচালা শিব মন্দির। যার সংস্কার করা নিষিদ্ধ, যেখানে মহাদেবকে মোটা শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়, যেখানে প্রকৃতিই নিজে এই প্রাচীন শিব মন্দিরকে রক্ষা করে চলেছে। আমরা দেশ বিদেশের অনেক মন্দির ঘুরে বেড়ালেও, অনেকেই জানি না এই মন্দিরের কথা। ১৭১৬ খ্রীষ্টাব্দে যখন সবে কোলকাতা শহরের জন্মলগ্নের সূচনা হচ্ছে, তখন বিখ্যাত হাটখোলা দত্ত পরিবারের রসিকলাল দত্ত এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। এটির অবস্থান নিমতলা শ্মশান ঘাটের খুব কাছেই। মন্দিরের শিবলিঙ্গকে প্রায় ৩০০ বছর ধরে একটি লোহার শিকল পরিয়ে রাখা আছে। এর পিছনে আছে লোকমুখে প্রচলিত এক কাহিনী। বহুবছর আগে মন্দিরের দরজা নাকি একবার আপনা হতে খুলে যায় আর তারপর স্থানীয় মানুষেররা দেখেন ভিতরে শিবলিঙ্গ নেই। তখন অনেক খোঁজা খুঁজির পর পাশ দিয়ে বহমান গঙ্গা বক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয় এই বিশাল শিবলিঙ্গ। তারপর থেকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা আছে। এর পরের কাহিনীতে আসা যাক, এই মন্দিরের সংস্কার নিয়ে। বহুবার চেষ্টা করা হয়েছে এই মন্দিরের সংস্কারের। কিন্তু প্রতিবারই বাধা এসেছে। সম্পূর্ণ হয় নি। এমনকি আধুনিক সময়ের অনেক বড় প্রোমোটারও এর সংস্কারের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সকলেই বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছেন। আসলে ভোলে বাবা মনেহয় এই "বৃদ্ধ মন্দিরে" এই ভাবেই অবস্থান করতে চান। মন্দিরের ঠিক মাথায় একটি বট গাছ আছে। আর মহাদেবের জটার ন্যায় তার অসংখ্য ঝুড়ি শক্ত করে ধরে রেখেছে এই মন্দির। আর এটাই অন্যতম আকর্ষণ এই মন্দিরের সুবিশাল শিবলিঙ্গের সাথে। সিঁড়ি দিয়ে উঠে এখানে শিবের মাথায় জল ঢালতে হয়।