কলকাতা, নিজস্ব সংবাদদাতা : বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ হিসেবে গণ্য করে কলকাতার সাত মাসের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় দোষীর মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিল কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। দোষীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি নির্যাতিত শিশুটির পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেছে আদালত। বিচারক ইন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায় মিত্র আসামিকে পকসো আইন ছাড়াও ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১১৮, ১৩৭ (২), ১৪০ (১), ১৪০ (৪) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন। উল্লেখ্য, গত ৩০ নভেম্বর এক ফুটপাথবাসী দম্পতি বড়তলা থানায় শিশু নিখোঁজের অভিযোগ জানিয়েছিলেন। অভিযোগ জানানোর কয়েক ঘণ্টা পরেই ওই ফুটপাথ থেকেই শিশুটিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। নিগৃহীত শিশুটি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছিল যৌনাঙ্গে একাধিক ক্ষতচিহ্ন আছে বলে। হাসপাতালে প্রাথমিক পরীক্ষায় যৌন নির্যাতনের প্রমাণও পাওয়া যায়। পরে রাস্তার একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বছর ৩৪-এর রাজীব ঘোষ নামের এক যুবকের খোঁজ পাওয়া যায়। দ্রুত তদন্তে নামে পুলিশ তার পর গত ৪ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। সোমবার ধৃত রাজীবকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ঘটনা সম্পর্কে সোমবার সরকারি আইনজীবী আদালতের বাইরে বলেন, ‘‘অজস্র সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আমরা দেখেছি। আরজি কর হাসপাতাল থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসেছিলেন শারীরিক পরীক্ষার জন্য। সেই চিকিৎসকও জানিয়েছেন, এটি বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা। যে ভাবে ওইটুকু শিশুর উপর অত্যাচার করা হয়েছে, তা ভাবা যায় না। আদালত অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।’’ ঘটনাটি নিয়ে ডিসি (উত্তর) দীপক সরকার বলেন, ‘‘সাত মাস বয়সি একটি শিশুর উপর নৃশংস অত্যাচারের খবর পেয়ে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ি অভিযুক্তকে ধরতে। তিন-চার দিন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করেছি আমরা। নির্যাতিতার পোশাকে পাওয়া অপরাধের বিভিন্ন নমুনার সঙ্গে অভিযুক্তের ডিএনএ মিলে গিয়েছে। সমস্ত তথ্যপ্রমাণ পেয়ে আদালতের মনে হয়েছে, এটি বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সাত মাসের ওই শিশুটি এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। জানি না, সে আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে কি না। তবে তার উপর যে নৃশংস অত্যাচার হয়েছে, সেই অপরাধের ন্যায়বিচার আমরা ৭৮ দিনের মধ্যে এনে দিতে সক্ষম হয়েছি।’’
সাত মাসের এক শিশুকে ধর্ষণ,দোষীকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিল কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্ট!
