নিজস্ব প্রতিবেদন : আজ শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ১৯০ তম জন্মজয়ন্তী । বাংলার এই মণীষীর জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বেলুড়মঠে রীতি মেনে একাধিক অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে সকাল থেকেই । হুগলি জেলার কামারপুকুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণদেব। উনবিংশ শতাব্দীর ভারতে সম্ভবত তিনিই ছিলেন সবথেকে উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব। মা কালীর এই সাধককে নারায়ণের আধুনিক যুগের অবতার বলে মনে করেন তাঁর ভক্তরা। তাঁর মধ্যে ঈশ্বরের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল বলে অনেকের মনেই বিশ্বাস। তবে রামকৃষ্ণ নিজে কোনও দিন নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করেননি।অত্যন্ত দরিদ্র গ্রাম্য সাধারণ পরিবারে জন্ম হয়েছিল তাঁর। ছোটবেলায় তাঁর নাম ছিল গদাধর চট্টোপাধ্যায়। বাবা ছিলেন ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় ও মা চন্দ্রামণি দেবী। রাণী রাসমণি প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরে প্রধান পুরোহিতের দায়িত্বে ছিলেন রামকৃষ্ণ দেব। ২৩ বছর বয়সে পঞ্চবর্ষীয়া সারদা দেবীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। রামকৃষ্ণদেব ধর্মকে সকল কড়া নিয়মের বন্ধন থেকে মুক্তি দিয়ে সাধারণ মানুষের মনের কোণে পৌঁছে দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন সকল ধর্মের উর্ধ্বে। আজ শ্রীরামকৃষ্ণদেবের ১৯০ তম জন্মজয়ন্তীতে জেনে তাঁর কয়েরটি অমর বাণী।
* সকল নারীর মধ্যেই শক্তিরূপীনির অবস্থান।
* জ্ঞান আমাদের একতার দিকে নিয়ে যায় আর অজ্ঞানতা আমাদের পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন করে।
* ধর্মের বইতে অনেক ভালো ভালো কথা লেখা থাকে। কিন্তু সেগুলো পড়লেই কেউ ধার্মিক হয়ে যায় না। সেগুলোকে নিজের মধ্যে ব্যবহার করতে হবে।
* যাঁরা ঈশ্বরের পূজারী, তাঁরা সকল ধর্ম, সকল জাতির ঊর্ধ্বে।
* কখনও ভেবো না যে তোমার বিশ্বাসটাই সত্যি, আর অন্যের বিশ্বাস মিথ্যে। এটা নিশ্চিত জেনো যে নিরাকার ঈশ্বর যেমন সত্যি, সাকার ঈশ্বরও ততটাই সত্যি। যাঁর প্রতি তোমার মন চায়, তাঁরই আরাধনা করো।
* নিঃস্বার্থ কাজ এবং ঈশ্বরের প্রতি ভালোবাসা নিজের মনে জাগিয়ে তোলো। তাহলে ভগবানের কৃপায় তাঁকে অনুভব করতে পারবে। ঈশ্বরকে দেখতে পাবে, তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারবে, ঠিক আমি এখন যেভাবে তোমার সঙ্গে কথা বলছি।
* ঈশ্বরের অনেক নাম এবং অনেক রূপ। যে নামে তাঁকে ডাকতে ইচ্ছে হয় ডাকো। মন দিয়ে ডাকতে পারলেই তাঁর দেখা পাবে।
* মানুষ হল বালিশের ঢাকনার মতো। কোনও বালিশের ঢাকনা লাল, কোনওটার নীল, কোনওটার কালো। কিন্তু ভেতরে সবারই এক তুলো ভরা। তেমন মানুষও বাইরে থেকে কেউ সুন্দর, কেউ বিশ্রী, কেউ ধার্মিক, কেউ বা আবার পাজি। কিন্তু ভেতরে সবারই ঈশ্বরের শক্তি রয়েছে।
* সারা বিশ্বসংসার ঘুরে আসলেও তুমি যা চাও, তা তুমি পাবে না। কারণ যা তুমি চাও, তা তোমার মনের মধ্যেই রয়েছে।
