ঢাকা, জাকির হোসেন: এখন থেকে বাংলাদেশে কারা রাষ্ট্রীয় তথা সরকারি চাকরি পাবে না তা সাফ জানিয়ে দিল নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যে সমস্ত সংগঠন নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাদের সঙ্গে যুক্ত বা জড়িত কেউই চাকরি পাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ৷ প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) নিষিদ্ধ করা হয়েছে আওয়ামী লীগের শাখা ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগকে। ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের৷ শেষ হয় শেখ হাসিনার দীর্ঘ সাড়ে পনেরো বছরের স্বৈরশাসনের৷ জুলাইয়ে ছাত্রজনতার আন্দোলন চলাকালে দেশজুড়ে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায় শাসকদল আওয়ামী লীগ, যাতে নেতৃত্ব দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ হাসিনার পতনের পরে তাই দেশজুড়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠতে থাকে গণমানুষের মুখে মুখে। তবে, সারাদেশে একের পর এক সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম চালানো ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হলেও এর মূল বা মাতৃসংগঠন আওয়ামী লীগকে এখনও অবধি নিষিদ্ধ করা হয়নি। দেশটিতে শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক চলছে। এই সময়েই অন্তর্বর্তী সরকারের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ উপদেষ্টা জানালেন, নিষিদ্ধ বলে ঘোষিত সংগঠনের কোনও সদস্য বা কর্মী সরকারি চাকরি পাবেন না। জুলাই আন্দোলনের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন আসিফ। তিনি জানিয়েছেন, যে সব নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, সেখান থেকেও ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের কর্মীদের’ বাদ দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার, নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই কথা জানান আসিফ। সেখানে তিনি লেখেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের কোনও সদস্য প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত হতে পারবেন না। যেসব নিয়োগ এখনও প্রক্রিয়াধীন আছে, সেখান থেকেও তাদের বাদ দেওয়া হবে।’ পরবর্তী বিজ্ঞপ্তিগুলির শূন্যপদগুলিতে মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে বলেও জানান আসিফ। এর ফলে বেশি সংখ্যক প্রার্থী নিয়োগ করার সুযোগ তৈরি হবে বলেও জানান তিনি। ঘুষ দিয়ে ‘নিয়োগ বাণিজ্য’ বন্ধ করতে সরকার বদ্ধপরিকর বলেও দাবি করেন এই উপদেষ্টা৷ উল্লেখ্য, রাষ্ট্রীয় তথা সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ প্রথা বন্ধ করে মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে জুলাই মাসে বাংলাদেশে সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন শুরু হয়, যা পরবর্তীতে সরকার পতনের গণআন্দোলনে রূপ নেয়৷ এর জেরেই আগস্ট মাসের ৫ তারিখ পতন হয় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের।