বিশ্বকাপের ঝলকানিতে উঠে এসেছেন একঝাঁক নতুন তারকা, আবার কেউ ফিরে পেয়েছেন পুরনো ছন্দ। চলতি মাসেই মহিলাদের আইপিএল নিলাম—আর সেই নিলামের আগে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির টেবিলে এখন একটাই প্রশ্ন: কাকে রাখা হবে, কাকে ছাড়া হবে?
চলুন জেনে নেওয়া যাক এমনই কয়েকজন ক্রিকেটারের কথা, যাঁদের নিয়ে এখনই গরম বাজার।
আমনজ্যোৎ কৌর (মুম্বই ইন্ডিয়ান্স)
গত মরশুমে মুম্বইয়ের হয়ে খেললেও খুব বেশি সুযোগ পাননি। কিন্তু বিশ্বকাপে নিজের সামর্থ্য দেখিয়ে দিয়েছেন—ব্যাট-বল দুইয়েই কার্যকর। মুম্বইয়ে পূজা বস্ত্রকর এতদিন ছিলেন মূল বোলিং অলরাউন্ডার, কিন্তু এবার সেই জায়গা দখল করতে পারেন আমনজ্যোৎ। তাই তাঁকে ধরে রাখার ব্যাপারে মুম্বই নিশ্চিতভাবে আগ্রহী হবে।
শ্রী চরণী (দিল্লি ক্যাপিটালস)
মাত্র দু’টি ম্যাচ খেলেই দিল্লি থেকে বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছিলেন, আর তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ১৪ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপে নজর কেড়েছেন এই তরুণ স্পিনার। এতদিন দিল্লির প্রধান ভারতীয় স্পিনার ছিলেন রাধা যাদব, কিন্তু এবারের ফর্ম অনুযায়ী সেই জায়গা পেতে পারেন শ্রী চরণী। যদি দিল্লি তাঁকে ছেড়ে দেয়, তাহলে নিলামে তাঁর জন্য বিডিং যুদ্ধ অনিবার্য।
অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড (দিল্লি ক্যাপিটালস)
অস্ট্রেলিয়ার এই তরুণ অলরাউন্ডার এ বছর দারুণ ছন্দে রয়েছেন। দীপ্তি শর্মার পর বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বাধিক উইকেট নিয়েছেন। তাঁর ব্যাটিংয়েও আগ্রাসন আছে, যা দলকে ভারসাম্য এনে দেয়। দিল্লি তাঁকে ধরে রাখতেই চাইবে—না রাখলে তাঁকে নিয়ে প্রতিযোগিতা হবে ভয়ানক!

মারিজ়ান কাপ (দিল্লি ক্যাপিটালস)
দক্ষিণ আফ্রিকার অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার কাপ বিশ্বকাপে ব্যাট-বল দুইয়েই ছন্দে ছিলেন। সাদারল্যান্ডের সঙ্গে একই দলে থাকার কারণে দিল্লির সামনে একটা বড় প্রশ্ন—দু’জনকেই কি রাখা সম্ভব? যদি না রাখা হয়, তবে কাপের দিকে ঝাঁপাবে একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজি, বিশেষ করে যারা অলরাউন্ডারের খোঁজে আছে।
নাদিন ডি ক্লার্ক (মুম্বই ইন্ডিয়ান্স)
গত মরশুমে মাঠে নামার সুযোগ পাননি একবারও। অথচ বিশ্বকাপে তাঁর স্ট্রাইক রেট দ্বিতীয় সর্বাধিক! ব্যাট হাতে ম্যাচ ফিনিশ করা আর উইকেট তুলে নেওয়া—দুই ক্ষেত্রেই তিনি চমক দেখিয়েছেন। যদি মুম্বই তাঁকে ছেড়ে দেয়, তাহলে নিলামে তাঁর দিকে নজর থাকবে একাধিক দলের।
লরা উলভার্ট (গুজরাত জায়ান্টস)
গত তিনটি বিশ্বকাপে সর্বাধিক রান করেছেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার। অথচ গতবার আইপিএলে মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। এবার গুজরাত তাঁকে ধরে রাখবে বলেই ধারণা। এমনকি অধিনায়কত্বের দায়িত্বও তাঁর কাঁধে পড়তে পারে—গুজরাতের টিম ম্যানেজমেন্টে এ নিয়েও শুরু হয়েছে আলোচনা।

অ্যাশলি গার্ডনার (গুজরাত জায়ান্টস)
গতবার ছিলেন দলের অধিনায়ক এবং দারুণ খেলেছিলেন। এ বারও বিশ্বকাপে তাঁর পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। এখন গুজরাতের চিন্তা—অধিনায়ক হিসেবে গার্ডনারকে রাখবে, নাকি উলভার্টের হাতে দেবে দায়িত্ব? নিলামের আগে এই দ্বন্দ্বই গুজরাতের কৌশলের মূল বিষয় হয়ে উঠছে।
হারমানপ্রীত কৌর
ভারতীয় অধিনায়কের অভিজ্ঞতা, বড় ম্যাচের উপস্থিতি এবং লিডারশিপ স্কিল তাঁকে করে তুলেছে নিলামের ‘হট প্রপার্টি’। যেকোনো দল তাঁকে অধিনায়ক হিসেবে চাইবে।

মহিলাদের আইপিএল নিলাম ২০২৫-এ তাই শুধু নতুন মুখ নয়, পুরনো তারকারাও থাকবেন ফোকাসে। ব্যাটিং-অলরাউন্ডার থেকে লেগ-স্পিনার—প্রত্যেকে হয়ে উঠেছেন সম্ভাব্য ‘গেম চেঞ্জার’। কার ভাগ্যে কোন জার্সি উঠবে, সেটাই এখন ক্রিকেটপ্রেমীদের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।