নিজস্ব সংবাদদাতা : রাজধানী দিল্লিতে বায়ুদূষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে স্বাভাবিক জীবনযাপন কার্যত বিপন্ন। শ্বাস নিলেই শরীরে ঢুকছে বিষ। শনিবার সন্ধ্যায় দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) ৪৪১-এ পৌঁছনোর পর পরিস্থিতিকে ‘সিভিয়ার প্লাস’ ঘোষণা করে গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যানের সর্বোচ্চ স্তর GRAP-4 কার্যকর করেছে কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট (CAQM)। দূষণের দাপটে শহর জুড়ে বাড়ছে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসজনিত নানা রোগ। হাসপাতালগুলিতে রোগীর চাপ বাড়ছে প্রতিদিন। সাধারণ মানুষ বলছেন, মাস্ক ছাড়া বাইরে বেরোলেই চোখ জ্বালা, নাক-পোড়া ও গলা ব্যথা শুরু হচ্ছে।

দিল্লি সরকার নির্দেশ দিয়েছে, সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা চলবে হাইব্রিড মোডে। অর্থাৎ স্কুলে উপস্থিতি ও অনলাইন—দুই পদ্ধতিতেই ক্লাস হবে। নার্সারি থেকে একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এই নিয়ম কার্যকর থাকবে, দশম শ্রেণি এর বাইরে রাখা হয়েছে। কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, পরিবেশ (রক্ষা) আইন, ১৯৮৬ অনুযায়ী, সরকারি ও বেসরকারি অফিসে মাত্র ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ চালানোর নির্দেশ জারি হয়েছে। বাকি কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। GRAP-4 কার্যকর হওয়ার ফলে দিল্লি জুড়ে সমস্ত নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ। দূষণ নিয়ন্ত্রণে শহরে ট্রাক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় পণ্যবাহী ট্রাক ঢুকতে পারবে। তবে সিএনজি, এলএনজি ও ইলেকট্রিক যানবাহনের উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি আরও অবনতি হলে ফের জোড়-বিজোড় গাড়ি চলাচল ব্যবস্থা চালু করা হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মাত্রার দূষণ শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। প্রশাসনের তরফে নাগরিকদের অপ্রয়োজনীয়ভাবে বাইরে না বেরোনো, মাস্ক ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আবেদন জানানো হয়েছে। দূষণের কালো চাদরে ঢাকা দিল্লি আজ এক গভীর স্বাস্থ্য সংকটের মুখে। প্রশ্ন উঠছে—এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির পথ কবে মিলবে?