Skip to content

জামিন মঞ্জুর,শুধুমাত্র ভুল 'ঠিকানা'-র কারণে ৬ বছর ধরে জেলবন্দী ঝাড়খণ্ডের নলিনী!

পশ্চিম মেদিনীপুর, সেখ ওয়ারেশ আলী : শুধুমাত্র ভুল 'ঠিকানা'-র কারণে ৬ বছর ধরে জেলবন্দী নলিনী। জামিন মঞ্জুর হয়েছিল ২০১৮ সালে। ঠিকানা ভুল থাকায়, জেল থেকে বেরোতে পারেন নি! প্রায় ৬ বছর পর, ২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মেদিনীপুর মহিলা সংশোধনাগার থেকে জামিনে মুক্ত হলেন ঝাড়খণ্ডের মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা নলিনী চৌধুরী (নলিনী দেবী)। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ঝাড়খণ্ডের পালামৌ জেলার বাসিন্দা, মানসিক ভারসাম্যহীন নলিনী চৌধুরী ভুল করে ঢুকে পড়েন পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুন্ডা এয়ারবেস বা কলাইকুন্ডা বিমানঘাঁটি (কলাইকুন্ডা এয়ার ফোর্স স্টেশনে)-তে। হাই এলার্ট জোন হওয়ায় ওই এলাকায় সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ফলে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার তরফে মানসিক ভারসাম্যহীন নলিনী চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। সেই সঙ্গে দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত ওই হাই এলার্ট জোনে ঢুকে পড়ার অপরাধে IPC 447, IOC 7- প্রভৃতি ধারায় মামলা রুজু করা হয়। তবে, মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ২০১৮ সালেই তাঁর জামিন হয়ে যায়। কিন্তু, পুলিশি তদন্তে তাঁর নাম ও ঠিকানা ভুল রেকর্ড করা হয়। ঝাড়খন্ডের বাসিন্দা হলেও, তাঁর ঠিকানা উত্তরপ্রদেশ দেওয়া হয় আদালতের কাছে। নাম নিয়েও সামান্য বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। এই কারণেই, জামিনের কাগজপত্র ভুল ঠিকানায় পৌঁছতে থাকে। ফলে সেখান থেকে কোন প্রত্যুত্তর আসে না! ফলে ২০১৮ সালে জামিনে মুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও, বছরের পর বছর জেলেই কাটতে থাকে নলিনীর। তাঁর স্থান হয়, মেদিনীপুর মহিলা সংশোধনাগারে! এদিকে, জাতীয় আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ বা নালসা (NALSA)-র তরফে সম্প্রতি সারাদেশের ১০৪ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই তালিকাতে নাম ছিল পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর মহিলা সংশোধনাগারে বন্দি নলিনী চৌধুরীর নামও। অন্যদিকে, জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের নবনিযুক্ত সচিব সাহিদ পারভেজ গত নভেম্বর মাসে মেদিনীপুর মহিলা সংশোধনাগারে গিয়ে নলিনী চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর তাঁর প্রকৃত ঠিকানা উদ্ধার করতে সক্ষম হন। নলিনী দেবী ডিএলএসএ (DLSA)-র সচিবকে যে ঠিকানা বলেন, তা থেকে ঝাড়খণ্ডের পালামৌ জেলার একটি ঠিকানা উদ্ধার হয়। এরপরই, পালামৌ জেলার চয়নপুর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ নলিনী দেবীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন। গত এক মাস ধরে সমস্ত বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর, বৃহস্পতিবার নলিনী দেবীর স্বামী, ভাই, মেয়ে, জামাই সহ পরিবারের সদস্যরা মেদিনীপুর শহরে পৌঁছন। তাঁরা সমস্ত কাগজপত্র আদালতে জমা দেন। শুক্রবার জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ৭ বছর পর মেদিনীপুর মহিলা সংশোধনাগার থেকে জামিনে মুক্ত হলেন নলিনী দেবী।

Latest