নিজস্ব সংবাদদাতা : আসানসোল উমারানি গড়াই স্কুলে প্রথম থেকেই ভাল ছাত্রী হিসেবে পরিচিত ছিল থৈবি মুখার্জী। শুক্রবার মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে মাধ্যমিকেও স্কুলে সেরা হিসেবে রইল সে। মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর ৬৭৪। লিভারের রোগে গত ১৬ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়েছে। পরীক্ষার আগে জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছিল থৈবি। কিন্তু লেখাপড়ার প্রতি টান থাকায় পেটে অসহ্য যন্ত্রনা নিয়েই সে পরীক্ষা দিয়েছিল। শুধুমাত্র সুস্থ ছিল বাংলা পরীক্ষার দিন। আর বাংলাতেই তার প্রাপ্ত নম্বর ৯৯। তারপর থেকেই নম্বর কিছুটা কমতে থাকে। যার পিছনে শারীরিক অসুস্থতাই কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। যদিও অন্যান্য বিষয়েও তার নম্বর যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য। থৈবি এতটাই মেধাবী ছিল, সুস্থ অবস্থায় পরীক্ষা দিতে পারলে হয়তো রাজ্যে সে সেরা হতে পারত, দাবি স্কুলের শিক্ষিকাদের। থৈবির বাবা বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় পেশায় একজন হোমিওপ্যাথি ডাক্তার। মা পিউ মুখোপাধ্যায় গৃহবধূ। মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে মেয়ের লিভারের রোগ ধরা পড়ার পর চিকিৎসার জন্য হায়দ্রাবাদ, ভেলোর সর্বত্র ছুটে যান তাঁরা। লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার জন্য প্রয়োজন বিপুল অঙ্কের টাকা। এগিয়ে আসে স্কুল এবং শহরবাসী। তার চিকিৎসার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় করা আবেদনে সাড়া দেয় বহু মানুষ। জানা গিয়েছে, সবাই মিলে চেষ্টা করে ৪৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ জোগাড় করা হয়েছিল। তবু বাঁচানো যায়নি থৈবিকে। থৈবির কাহিনি আমাদের কাঁদায়, ভাবায়। কী অসময়ে থেমে গেল এক সম্ভাবনার পথ। অথচ এই গল্প কেবল দুঃখের নয়, এটি সাহস, সংগ্রাম আর অদম্য মেধারও এক উজ্জ্বল নিদর্শন।

