নিজস্ব সংবাদদাতা : পুরুলিয়ায় কেন্দ্রে মোট ১২ প্রার্থী এবার মনোনয়ন পর্ব শেষে। কিন্তু ডজন খানেক প্রার্থী থাকলেও বহু বছর পর পুরুলিয়া কেন্দ্রে লড়াই এবার চতুর্মুখী। আর এই চতুর্মুখী লড়াইয়ে ভাবিয়ে তুলছে এই কেন্দ্রের দখলে থাকা বিজেপিকে। এদিকে কুড়মি প্রার্থী অজিতপ্রসাদ মাহাতো এই কেন্দ্রে বিজেপিকে ব্যাপক চাপে ফেলে দিয়েছে। কারণ উনিশের নির্বাচনে অধিকাংশ কুড়মি ভোট পদ্মে পড়ে। EVM-এক নম্বরে রয়েছেন পদ্ম চিহ্নে জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। দু’নম্বরে সিংহ ছাপে ফরওয়ার্ড ব্লকের ধীরেন্দ্রনাথ মাহাতো। তিন নম্বরে হাত ছাপে কংগ্রেস প্রার্থী নেপালচন্দ্র মাহাতো। চার নম্বরে জোড়াফুলে শান্তিরাম মাহাতো। কুড়মি প্রার্থী নির্দলের অজিতপ্রসাদ মাহাতো রয়েছেন আট নম্বরে।কুড়মি প্রার্থী প্রতীক বালতি। ঠিক এর পরেই নয় নম্বরে নির্দলের অজিতকুমার মাহাতো। প্রতীক টিলার। চিন্তায় শাসক দল তৃণমূলও। এ প্রসঙ্গে আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা (প্রধান নেতা) তথা কুড়মি প্রার্থী অজিতপ্রসাদ মাহাতো বলেন, “বিজেপি যদি মনে করে যে তারা ব্যাপক রাজনৈতিক কৌশলি চাল চেলেছে তা একেবারেই ভুল। বালতি প্রতীকে সব ভোট আমরা নিয়ে পুরুলিয়া কেন্দ্রে এবার ইতিহাস গড়ব।” কুড়মি কাঁটা বিজেপিকে প্রথম থেকে চাপে রাখলেও এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছুই বলতে চাইছে না পুরুলিয়া জেলা বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রাঙ্গা বলেন, “সামাজিক সংগঠন আলাদা রাজনৈতিক দল আলাদা। ভোটের ফলাফল তা বুঝিয়ে দেবে এই কেন্দ্রে এবার একেবারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চার প্রার্থীর। বিজেপির পক্ষে থাকা ঊনিশের একাধিক ইস্যু এবার ভোঁতা হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাংসদের সেভাবে কাজ না করা, এলাকায় দেখতে না পাওয়া। অন্যদিকে বাম সমর্থিত কংগ্রেসের নেপাল মাহাতো বিজেপি- তৃণমূলের বিকল্প হয়ে উঠে এসেছেন। কংগ্রেস প্রার্থী নেপাল মাহাতোর প্রচারে সেই ছবিও ধরা পড়ছে। সেই সঙ্গে ফিরিয়ে এনেছেন উনিশে সিপিএম এবং কংগ্রেসের যে ভোট বিজেপিতে চলে গিয়েছিল। অন্যদিকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বেনিয়মের অভিযোগ থাকলেও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য এই কেন্দ্রের সহজ- সরল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো। সাংগঠনিকভাবে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে শাসক দলও জেলায় নিজেদেরকে খানিকটা গুছিয়ে নিয়েছে। একইভাবে এই লড়াইয়ে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ছেন না কুড়মি প্রার্থী অজিতপ্রসাদ মাহাতো। তাঁর প্রধান ভরসা এই কেন্দ্রে ৩৫ শতাংশ কুড়মি ভোট। সেই সঙ্গে হিতমিতান অর্থাৎ তাদের সহযোগী বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ভোট। সবে মিলিয়ে চতুর্মুখী লড়াই-এ জমে উঠেছে এবারের নির্বাচন।