ঢাকা, জাকির হোসেন: ক্রিকেটের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার তিনি৷ টানা দশ বছর ছিলেন ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার৷ বাংলাদেশের হয়ে খেলা ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়দের একজন সাকিব আল হাসান৷ কিন্তু ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ হয়ে যখনই আবির্ভূত হলেন, ফ্লপ হয়ে গেলেন নিজের বিতর্কিত সব কর্মকান্ডের মাধ্যমে৷ নিজের নামে একের পর এক কালিমা লেপন করতে শুরু করলেন৷ অবৈধ স্বর্ণব্যবসা, বিতর্কিত পণ্য ও সাইটের বিজ্ঞাপনের মডেল, করফাঁকি, নিজের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ঠিকমত বেতন না দেওয়া, দেশে-বিদেশে একাধিক অবৈধ কাজের সাথে সম্পৃক্ততা সহ বিস্তর অভিযোগ সাকিবের বিরুদ্ধে৷ অপরদিকে, দুই বাংলাতেই জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌস আহমেদ৷ 'হঠাৎ বৃষ্টি' সিনেমা দিয়ে দুই বাংলার মানুষের মনে জায়গা করে নেন ফেরদৌস৷ ঢাকা ও কলকাতার সিনেমাতে অভিনয় করার পাশাপাশি বলিউডেও অভিনয় করেছেন৷ সাকিব ও ফেরদৌস দু'জনই আওয়ামী লীগের টিকেটে ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগে বিতর্কিত বাংলাদেশের সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে হয়েছিলেন সংসদ সদস্য৷ গত জুলাই মাসে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের পথ ধরে ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হলে সংসদ ভেঙে দেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদ শাহাবুদ্দিন৷ জুলাইয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও এর পথ ধরে যে গণআন্দোলন হয়েছে, তাতে ছাত্রজনতার ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে হাসিনার মদতপুষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী৷ তাদের সাথে বিভিন্ন জায়গাতে সংসদ সদস্যরা, আওয়ামী লীগ ও এর ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরাও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালায়৷ এই হত্যাযজ্ঞের বিচারের দাবিতেই বাংলাদেশজুড়ে একের পর এক মামলা হচ্ছে শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে৷ এরই পথ ধরে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের বিরুদ্ধে ঢাকার আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। পোশাককর্মী মোহাম্মদ রুবেলকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে এই মামলা করা হয়েছে। গত ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার নিহত রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন৷ কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরে সরকার পতনের দাবিতে সংঘর্ষ চলাকালে ৫ আগস্ট পোশাক কারখানার কর্মী রুবেল গুলিবিদ্ধ হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পুলিশ সূত্র জানায়, মামলায় মাগুরা–১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানকে ২৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আর ঢাকা–১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদকে ৫৫ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৫৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদাবর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার এজাহারে বাদীর অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। ওই দিন রুবেল আদাবরের রিংরোডে মিছিলে অংশ নেন। এ সময় আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশ, প্ররোচনা, সাহায্য, সহযোগিতা ও মদদে মিছিলে গুলি ছোঁড়া হয়। বুকে ও পেটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রুবেলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ৭ আগস্ট মারা যান।