পশ্চিম মেদিনীপুর নিজস্ব সংবাদদাতা : ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে টাকা বরাদ্দ নিয়ে লোকসভা ভোটের প্রচার পর্বে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রী দের মুখে টানা তিন মাস ধরে হইচই হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য ছিল ঘাটালকে বন্যা থেকে বাঁচাতে ওই প্রকল্প রাজ্য সরকার একাই করবে। অন্যদিকে পদ্ম শিবির তরফ থেকে জানানো হয় কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফিরে প্রথম বাজেটে মাস্টার প্ল্যানে টাকা বরাদ্দহবে। এই কথা শোনা গিয়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রী থেকে ঘাটালের পদ্ম প্রার্থীর মুখেও। যদিও বাস্তবে প্রস্তাবিত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য চলতি বছরের কেন্দ্রীয় বাজেটে কোনও বরাদ্দই হল না। অথচ সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটের প্রচার পর্বে ভোট জিততে পদ্ম শিবির হাতিয়ার করেছিল ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানকে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের প্রথম সাধারণ বাজেটে ঘাটালের ওই প্রকল্পে কোনও টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় ঘাটালবাসী হতাশ। এইদিকে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি বাজেটের প্রতিলিপি পুড়িয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে । কমিটির সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, “মঙ্গলবার সাধারণ বাজেটে হতাশ ঘাটাল-সহ দুই মেদিনীপুরের কুড়ি লক্ষ মানুষ।বন্যা মোকাবিলায় কোনও টাকা বরাদ্দ নেই। বাজেটের প্রতিবাদে ২৫ জুলাই বিক্ষোভ মিছিল করে আন্দোলন শুরু হবে।” বিজেপির ঘাটাল সাংগাঠনিক জেলা সভাপতি তন্ময় ঘোষের বক্তব্য , “ভোটের সময় দলীয় প্রস্তাবনায় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান ও রেলপথ দুটিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। ঘাটালে বিজেপির সাংসদ হলেই এ বারই টাকা বরাদ্দ হয়ে যেত। বাজাটের আগে তো দিল্লিতে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে তদ্বির করতে হবে। ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ সেটা করেননি। তাই বরাদ্দও হয়নি।” তৃণমূলের প্রবীণ নেতা তথা মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া পাল্টা বলেন, “মাস্টার প্ল্যান নিয়ে ভোটের আগে বড় বড় কথা বলে বাজার গরম করেছিলেন পদ্ম নেতারা। অথচ বাজেটে মাস্টার প্ল্যানে কোনও টাকা বরাদ্দ হয়নি। বন্যা মোকাবিলায় গোটা বাংলার জন্য কোনও টাকা দেয়নি কেন্দ্র। বিজেপি যে কত অসত্য ও মিথ্যা কথা বলে, ঘাটালের মানুষ বুঝে গিয়েছেন।” মন্ত্রী মানস আবারও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রাজ্য সরকার রুপায়ণ করবে। তার পদক্ষেপও শুরু হয়েছে।” কেন্দ্রীয় সরকার ২০২২ সালে রাজ্য সরকারকে ‘ফ্ল্যাড ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বর্ডার এরিয়া’ প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেয়। সম্মতি জানায়ও রাজ্য সরকার। এমনকি কেন্দ্র সরকার ‘ইনভেস্টমেন্ট ক্লিয়ারেন্স’ও দেয়। এত কিছুরও পরে নতুন করে আর কোনও অগ্রগতি বা টাকা বরাদ্দ কিছুই হয়নি। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে ঘাটালের প্রস্তাবিত মাস্টার প্ল্যান কার্যকর করতে রাজ্য সরকার পদক্ষেপ করছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। বর্তমান ঘাটালের সাংসদ দেবের সঙ্গে প্রাক্তন সেচমন্ত্রীর বৈঠকও হয়েছিল। তারপরই শিলাবতীর সঙ্গে চন্দ্রেশ্বর খালের সংযুক্তির জন্য জমি চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে।